পুলিশি পাহারায় পর্যটক, বাতিল হচ্ছে হোটেল বুকিং

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে বন্দুকধারীদের হামলার পর থেকে সিলেটে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক ও পর্যটকদের বাড়তি নিরাপত্তা দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

যেসব হোটেলে বিদেশিরা অবস্থান করছেন সেখানে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। ঘুরতে বের হলেও তাদেরকে নিরাপত্তা বলয়ে রাখা হচ্ছে। ঘোরাঘুরি শেষে পুলিশি হোটেলে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে পুলিশ প্রহরায়।

গুলশানে জঙ্গি হামলার পর সিলেটবিমুখ হয়ে পড়ছেন পর্যটকরা। তারা হোটেলের বুকিংও বাতিল করছেন।

হোটেল মালিকরা জানিয়েছেন, ঈদের ৯ দিন ছুটিতে সিলেটে পর্যটকদের ঢল নামার কথা। জুনের শেষেই বুকিং হয়ে গিয়েছিল তিনশত’র কাছাকাছি সব হোটেলের রুম। পর্যটকদের বরণ করতে সব প্রস্তুতিও সেরে রেখেছিলেন তারা।

পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে সিলেটের হোটেলগুলোও নতুন ধাঁচে সাজানো হয়েছিল। সংস্কার ও উন্নয়ন করে হোটেলগুলো আকর্ষণীয় করে তুলেছিলেন হোটেল মালিকরা।

শুক্রবার রাতে গুলশানকাণ্ডের পর পর্যটকরা বুকিং বাতিল করা শুরু করেছেন। যে হারে প্রতিদিন বুকিং বাতিল হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে ঈদের ছুটিতে সিলেট পর্যটকশূন্য থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে বড় ধরনের ক্ষতি হবে হোটেল মালিকদের।

সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ জানিয়েছেন, শুক্রবারের পর থেকে প্রায় ২০ ভাগ বুকিং বাতিল হয়েছে। পরিবার নিয়ে যারা সিলেটে বেড়াতে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন তাদের প্রায় সবাই হোটেল বুকিং বাতিল করেছেন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এবার ঈদে হোটেল ব্যবসায়ীরা মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবেন।

তবে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ  জানিয়েছেন, চাকুরিজনিত কারণে যেসব বিদেশি সিলেটে অবস্থান করতেন, তাদের সবাই ঈদের ছুটিতে চলে গেছেন। আর যারা আছেন তাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, বর্তমানে সিলেটে দুইজন বিদেশি অবস্থান করছেন। পুলিশ তাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিচ্ছে।

পর্যটন জেলা হিসেবে সারাদেশে পরিচিত সিলেট। সিলেটের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে সারাবছর দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ছুটে আসেন। প্রকৃতিকন্যা জাফলং, জল-পাথরের অপরূপ বিছানাকান্দি, সফেদ ঝর্নাধারা পাংথুমাই, জলারবন রাতারগুল, পান্না-সবুজ জলের লালাখাল, সীমান্তঘেঁষা সারি সারি পাহাড়, হাওর-বাওরের উত্তাল ঢেউ দেখে মুগ্ধ হয়ে ফেরেন পর্যটকরা।

গত রোববার সিলেটে বেড়াতে এসে একটি হোটেলে ওঠেন কানাডিয়ান দুই নাগরিক। হোটেলে ওঠার পর থেকে তাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত হয় একদল পুলিশ। পুলিশি নিরাপত্তায় তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে।

এরপর পুলিশি নিরাপত্তায় তারা সিলেট শহরের আরো কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখেন। পরে পুলিশ তাদেরকে আবারও হোটেলে নিয়ে যায়। তারা যত দিন সিলেটে অবস্থান করবেন তত দিন তাদেরকে পুলিশি নিরাপত্তায় রাখা হবে বলে বাংলামেইলকে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা রহমত উল্লাহ।

প্রসঙ্গত, ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিসান বেকারি রেস্টুরেন্টে হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী, জিম্মি করা হয় রাতের খাবার খেতে আসা দেশি-বিদেশি অতিথিদের। ৫ বন্দুকধারী হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জিম্মিকে জবাই করে হত্যা করে।

 

সূত্র: বাংলামেইল