পুঠিয়ায় যুবককে হত্যার অভিযোগ, সুষ্ঠু তদন্তের দাবী

পুঠিয়া প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর পুঠিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ এনে ১৪ জনের নামে এবং অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এব্যপারে সন্দেহজনক ৩ জনকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বাকীরা আত্মগোপনে রয়েছেন। নিহত ওই যুবক হলেন, জেলার পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের কৈপুকুরিয়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে রকি (২০)। সে যাত্রীবাহী বাসের সুপার ভাইজারের কাজ করতো।

গত ৬ জুন রাত সাড়ে ৯ টার দিকে রকিকে মুমুর্ষ অবস্থায় পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সে সময় এব্যপারে থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয় এবং মৃত রকির লাশের ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। পরে ঘটনার প্রায় এক মাস পর গত ২ জুলাই সোমবার নিহত যুবকের মা রেহেনা খাতুন বাদী হয়ে রাজশাহীর আদালতে হত্যার অভিযোগ দায়ের করেন। পরে আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে জেলার পুুঠিয়া থানা পুলিশকে অভিযোগটি মামলা আকারে রেকর্ড করার নির্দেশ দেন। পুঠিয়া থানায় মামলা নং ২- ২ জুলাই।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, পুঠিয়া পৌর এলাকার শ্রী প্রভাতের ছেলে সুশান্ত (৩০), পালোপাড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে রকি (২২) ও ভালুকগাছি ইউনিয়নের ফুলবাড়ি দক্ষিন পাড়া গ্রামের মজের আলীর ছেলে সনি (২৭)।

ঘটনার দিন রকি সারাদিন তাদের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের প্রথমে পুঠিয়া থানা পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হলে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) ও থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাকিবুল হাসান।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, উক্ত আসামীগণের সঙ্গে মৃত রকির মামা শফিকুলের বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ¦ ছিলো এবং এরই সুত্র ধরে আসামীগণ বিভিন্ন সময় রকির মামা শফিকসহ তার পরিবারের অন্যন্য সদস্যদের হত্যার হুমকি প্রদান করতো।

পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে গত ৬ জুন রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টার দিকে ফুলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে গুরুতর আহত অবস্থায় রকি বাড়িতে ফোন করে। পরে পরিবারের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

রকির মামা শফিকুল বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে আমার ভাগ্নেকে হত্যা করে গায়ে বিষ ঢেলে দিয়েছে। যাতে সবাই মনে করে সে বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে থানায় হত্যার অভিযোগ করলেও পুলিশ অভিযোগটি আমলে না নিয়ে সময় ক্ষেপন করেছে। পরে গত ২ জুলাই আমার বোন বাদী হয়ে আদালতে অভিযোগ দায়ের করে। তিনি বলেন, রকির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে ও অন্ডকোষ চেপে ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবী করেন। এব্যপারে ভালুকগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান বলেন, আমিও বিষয়টি শুনেছি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলেটির মৃত্যু হয়। পরে এব্যপারে হত্যা মামলা করা হয়েছে। এব্যপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) ও থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত রাকিবুল হাসান জানান, মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। খুব শিগরি ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হবে।

স/শা