পুঠিয়ায় ভিজিএফ’র চাল পাচারের সময় গ্রাম পুলিশ আটক

পুঠিয়া প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীর পুঠিয়ায় এক ইউপি সদস্যের নির্দেশে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিজিএফ এর ১০৭ কেজি ওজনের ২ বস্তা চাল পাচার করে ওই ওয়ার্ড সদস্যের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের হাতে এক গ্রাম পুলিশ আটক হয়েছেন। পরে চালসহ তাকে আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার বিকেলে পরিষদে ভিজিএফ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সাথে অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ এবং ওই ইউপি সদস্যকে শোকজ করা হয়েছে।

সোমবার (০১ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফ এর ২ বস্তা চাল পাচার করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ওয়ার্ড সদস্য হলেন, ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ওয়ার্ড সদস্য মাসুদুল হাসান মিলন এবং গ্রাম পুলিশ টুকু তিনি ধোকরাকুল গ্রামের আবুল চকিদারের ছেলে।

স্থানীয়দের হাতে আটকের পর গ্রাম পুলিশ টুকু পরিষদ থেকে ২ বস্তা চাল পাচার করে ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিলনের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে তাৎক্ষণিক স্বীকার করেন।

প্রত্যাক্ষদর্শী ও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বেলাল হোসেন জানান, সোমবার দুপুরে ওই গ্রাম পুলিশ পরিষদের কাউকে কিছু না জানিয়ে একটি ভ্যানে করে ভিজিএফ এর ২ বস্তা চাল পাচার করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে ইউনিয়নের সিংড়া নামক এলাকায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে চাল কোথায় নিয়ে যাচ্ছে সে ব্যপারে জিজ্ঞাসা করলে ওয়ার্ড সদস্য মিলনের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন বলে স্বীকার করে। এসময় তিনিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিষয়টি তিনি তাৎক্ষনিক ইউপি চেয়ারম্যান তাকবীর হাসানকে মোবাইল ফোনে জানালে তিনি চালসহ ওই গ্রাম পুলিশকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রাম পুলিশকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

ভালুকগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান ভিজিএফ এর ২ বস্তা চাল পাচার করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, গত ঈদুল ফিতরের মধ্যে ইউনিয়নের উপকারভোগীদের মাঝে ভিজিএফ এর চাল বিতরন করা হয়। সে সময় ওয়ার্ড সদস্য মিলনের দেয়া তালিকার ৭ জন উপকার ভোগী পরিষদে চাল নিতে না আসায় চালগুলো পরিষদেই সংরক্ষিত ছিলো। হঠাৎ আজ ওই গ্রাম পুলিশ চালগুলো ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন।

এ ব্যপারে অভিযুক্ত ওয়ার্ড সদস্য ও গ্রাম পুলিশকে কারন দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে। আগামী তিনদিনের মধ্যে লিখিতভাবে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে এবং বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও অবহিত করা হয়েছে।

অভিযোগের ব্যপারে ওয়ার্ড সদস্য মাসুদুল হাসান মিলনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনিই গ্রাম পুলিশকে চাল নিয়ে তার বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয়দের সামনে গ্রাম পুলিশ এ কথা স্বীকারও করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়ার্ড সদস্য বলেন, আমি বলেছি, এ কথা কেও প্রমান করতে পারবে না।

এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওলিউজ্জামান জানান, বিষয়টি তিনি শোনার পর তাৎক্ষনিক সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে ভিজিএফ কমিটির সভা করে পুরো ঘটনাটি প্রতিবেদন আকারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রতিবেদন হাতে পেলে যাচাই বাছাই করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স/অ