পুঠিয়ায় বিএনপি নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

পুঠিয়া প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীর পুঠিয়ায় সাবেক মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও জিউপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি নুরুল ইসলামকে (৫৫) নির্মম ভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে পরিবারের অভিযোগ শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তার প্রতিপক্ষরা তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করতে পারে বলে ধারনা করছে। এনিয়ে উপজেলা জুড়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান পটলের ওপর হামলা চালিয়েছে তাকে আহত করেছে নুরুল ইসলামের সমর্থকরা। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা প্রায় আধাঘন্টা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

পরে থানা ও হাইওয়ে পুলিশ আধা ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তারপর থেকে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এদিকে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।

সোমবার (১০ জুন) দিবাগত রাতে উপজেলা সদরে অবস্থিত ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে আশরাফের ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নুরুল ইসলামের বাড়ি উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের হলহলিয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত কালু সরদারের ছেলে।

নিহত নুরুল ইসলামের বড় মেয়ে নাজমুন নাহার জানান, সম্প্রতি রাজশাহী জেলা সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ইউনিয়নের পুঠিয়া শাখার ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে তার বাবা সাধারন সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দীতা করেন। ভোটে কারচুপি করে তার বাবাকে পরাজিত দেখিয়ে তার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী আব্দুর রহমান পটলকে নির্বাচিত করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এ ঘটনায় তার বাবা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার কারণে তার বাবাকে পরিকল্পিত ভাবে প্রতিপক্ষরা হত্যা করতে পারে বলে ধারনা করছে তাদের পরিবার।

তিনি আরো জানান, সর্বশেষ গত সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার সময় তার বাবার সাথে শেষ বারের মত মোবাইলে কথা হয়েছিল। তারপর থেকে তার বাবার ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সারারাত তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এ বিষয়ে রাতেই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে পুলিশ সে সময় আমাদের অভিযোগ শুনেননি। আমাদের বলে, রাতে হবে না আগামীকাল আসেন। কিন্তু আজ (মঙ্গলবার) সকালে একটি ইটভাটায় তার মরদেহ পড়ে থাকার খবর পায়।

শ্রমিক নেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের ভোটে সাধারণ সম্পাদক পদে নুরুল ইসলাম ও আব্দুর রহমান পটলের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ চলছিলো। গত ২৪ এপ্রিল ত্রিবার্ষিক নির্বাচনে পুলিশের সহায়তায় পটলকে নির্বাচিত দেখিয়ে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় নুরুল ইসলামসহ আরো তিনজন নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। চলতি সপ্তাহে আদালত থেকে একটি আদেশ আশে শ্রমিক অফিসে নিখোঁজ হওয়ার আগে (সোমবার রাত ৮ টার দিকে) তিনি শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে এসেছিলেন। তিনি আরো জানান, নুরুল ইসলাম অফিস থেকে বের হওয়ার পর দুর্বৃত্তরা তাকে প্রথমে অপহরণ করে তারপর রাতেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে ইটভাটায় ফেলে রেখে গেছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাঠি বা ইট জাতিয় কিছু দিয়ে আঘাত করে এবং তার অণ্ডকোষ চেপে তাকে হত্যা করতে পারে। তবে ময়না তদন্তের প্রতিবেদন ছাড়া এই মুহুর্তে কিছুই বলা যাচ্ছে না। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।