পুঠিয়ার সেই দরিদ্র অদম্য মেধাবী রোজিনা এখন নার্স

মইদুল ইসলাম মধু:
দরিদ্রতা ও সকল বাধা বিপত্তিকে পায়ে ঠেলে পুঠিয়ার সেই অদম্য মেধাবী রোজিনা এখন পূর্ণাঙ্গ নার্স। করছেন অসুস্থ্য মানুষের সেবা। ধরেছেন  ভুমিহীন বাবার সংসারের হাল। পড়াশোনা করাচ্ছেন ছোট বোন মিতা খাতুনকে। উজ্জল করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর মুখ ।
কে এই রোজিনা?
জানা যায়, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার পূর্ব ধোপাপাড়া গ্রামের ভুমিহীন কৃষক আব্দুল লতিফ ও চাতাল শ্রমিক রেনু বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় রোজিনা। বাবা মা লেখা পড়ার খরচ চালাতে না পাড়ায় অষ্টম শ্রেনীতে থাকতেই বিয়ের পিড়িঁতে বসতে  হয়েছিল মেধাবী ছাত্রী রোজিনাকে। বিয়ের পর যৌতুকের কারনে স্বামীর নির্যাতনের স্বীকার রোজিনার মুক্তি মেলে তালাকে। পরে সংসার জীবনের ইতি টেনে ২ বছর পর বাবার বাড়ি ফিরে আবারো ভর্তি হন ধোপাপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মানবিক বিভাগের নবম শ্রেনীতে। শিক্ষকরাও তাকে গ্রহন করেন আগ্রহ সহকারে। কারন শিক্ষকরা জানতেন তাকে দিয়ে ভালো ফলাফল করানো সম্ভব। তাই তার প্রতি নিয়েছিলেন বিশেষ যত্ন করেছেন অর্থনৈতিক সহযোগীতাও।
তার যথার্থ প্রতিদানও দিয়েছিলেন রোজিনা ২০১১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের প্রথম জিপিএ-৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে। ২০১১ সালে অদম্য মেধাবী রোজিনার জীবন কাহিনী নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন মহল থেকে আর্থিক অনুদান আসে রোজিনার নামে। শুধু তাই নয় জাতীয় পাঠ্যপুস্তক “কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা” ষষ্ঠ শ্রেনীর বইটিতে তার জীবন কাহিনী ক্লাসে ক্লাসে পাঠদান করানো হচ্ছে।


কথা হয় রোজিনার গ্রামের বাড়িতে ছোট বোন মিতার সাথে। তিনি জানান, ২০১২ সালে ঢাকা মহিলা কলেজ থেকে রোজিনা অনার্স শেষ করে ভর্তি হন ঢাকা নার্সিং কলেজে ২০১৫ তে ডিপ্লোমা শেষ করেন। নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ইন্টার্নি শেষ করে পূর্ণাঙ্গ নার্স হয়ে কর্মরত আছেন ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে।
রোজিনার মা চাতাল শ্রমিক রেনু বেগম এ প্রতিবেদককে জানান, তিন সন্তানের মধ্যে রোজিনা সবার বড় মেজো মেয়ে মিতু খাতুন পড়াশোনা করছেন ছোট ছেলে রাব্বি মিস্ত্রি কাজ শিখছে। রোজিনার বাবা অন্ন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে আমি চাতালে কাজ করি। তিন জনের উপারজনের টাকায় সংসার চলে। রোজিনা খাতুন ঢাকায় কর্মরত থাকায় এব্যপারে তার কোন মন্তব্য দেওয়া যায়নি ।

স/শ