পুঠিয়ায় বিক্রি হচ্ছে কেমিক্যাল মেশানো গুড় !

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পুঠিয়ায় চিনি, আলু, ঝোলা গুড় আর বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের সংমিশ্রণে তৈরি হচ্ছে খেঁজুর গাছের গুড়। এসব গুড়ে সয়লাব উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে নেই ভেজাল নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ বলে অভিযোগ সাধারণ ভোক্তাদের।

সাধারণ ভোক্তারা বলছেন, চাহিদা বেশি থাকায় গুড় প্রস্তুতকারকরা বাড়তি দামে বিক্রি করতে ঝোলা খেজুর গুড়ের সঙ্গে চিনি আর আলু মিশিয়ে উৎপাদন ও বাজারজাত করছেন। বাজার থেকে কম দামে নিম্নমানের ঝোলা ও নরম গুড় কিনে তাতে চিনি, রং, হাইড্রোজ, সোডা, ফিটকারি মিশিয়ে গুড় তৈরি করছেন তারা। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, রাজশাহীর খেজুর গুড়ের সর্ববৃহৎ আড়ৎ হচ্ছে পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়া ও বানেশ্বর হাট। খেজুর গুড় উৎপাদন মৌসুম শুরু হলেই এই হাটসহ পুরো উপজেলা জুড়ে প্রায় আড়াই শতাধিক আড়তে গুড় কেনাবেচা হয়। হাটবারসহ প্রতিদিন সকাল থেকে ওই আড়ৎগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভীড় লেগে থাকে। বর্তমানে প্রতি কেজি গুড় ১১০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে বাজারগুলোতে।

গুড় বিক্রেতা নজরুল আলী বলেন, খেজুর গাছগুলোর যত্ন বা তদারকি না করায় অনেক গাছে রস কম হয়। সেক্ষেত্রে অল্প রসের মধ্যে অনেকেই চিনি দিয়ে গুড় তৈরি করেন। আবার কেউ কেউ বেশি লাভের আশায় ১০ কেজি খেজুরের গুড়ের মধ্যে ৫ কেজি চিনি মেশান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গুড় বিক্রেতা বলেন, খেজুর রসের গুড় তৈরি করতে কিছু চিনি মেশাতে হয়। তাহলে গুড়ের রং ও মান অনেক বেড়ে যায়। গুড়ের রং ভালো হলে বাইরের পাইকাররা বেশী দামে কিনতে আগ্রহী হয়।

ক্রেতা আসগর আলী বলেন, বেশিরভাগ গুড়ে আগেরকার দিনের মতো সুগন্ধি নেই, স্বাদও কমেছে। এখন কি সেই যুগ আছে! যে নির্ভেজাল গুড় পাবো।

তবে পুঠিয়া উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, ইতোমধ্যে জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার শাকিল আহম্মেদকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার বেশ কয়েকটি গুড়ের কারখানা পরিদর্শন করেছেন। খুব দ্রুত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাস্মদ আনাছ বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে দ্রুত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জি/আর