বানেশ্বর হাট টেন্ডার হাতিয়ে নিতে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা

পুঠিয়ায় পুলিশের উপস্থিতিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের উপর হামলা, ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহী-৫ আসনে (দুর্গাপুর-পুঠিয়া) নির্বাচনোত্তর সহিংসতা থামছেই না। গত ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগর প্রতিক) ওবায়দুর রহমানের কর্মী সমর্থকদের উপর একের পর হামলার ঘটনা ঘটছেই। সম্প্রতি স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান হামলার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তারপরও প্রতিনিয়ত হামলার ঘটনা ঘটছেই।

গত সোমবার রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক আবুল বাসারের উপর হামলার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এবার পুঠিয়ায় তার আর দুই কর্মীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের উপস্থিতিতে এই হামলা চালানো হয়। তবে হামলার শিকার আহতরা বলছেন- এগুলো হামলার ঘটনা সরাসরি এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারার নির্দেশ্যে হচ্ছে। গত সোমবার পৌর যুবলীগ নেতা আবুল বাসারের উপর হামলার ঘটনাও এমপির নির্দেশ্যে হয়েছে এমন দাবি করা হয়।

আজ বুধবার বিকেলের দিকে পুঠিয়ার বানেশ্বর হাট ইজারা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাবু শেখ ও সুজন নামে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমানের কর্মীর উপর হামলা চালিয়ে মারপিট করা হয়েছে।  প্রকাশ্যে শোডাউনের মাধ্যমে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায় এমপি দারার সমর্থকরা। হামলার সময় সেখানে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও কোনো প্রতিকার করতে পারেনি। কারণ হামলার ঘটনায় পুলিশ এমপির কারণে ছিল নিশ্চুপ এমনটা বলছেন থানার ওসি।

জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঈগল প্রার্থী এবং নৌকা প্রার্থীর সমর্থনের বিষয়সহ এক মাস পর বানেশ্বর হাট টেন্ডারকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে পুঠিয়া থানার বানেশ্বর বাজারের গরুহাটি হতে এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারার অনুসারী বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক  আবুল কালাম আজাদের ছেলে দোয়েলের নেতৃত্বে ৯০ থেকে ১০০ জন যুবক লোহার রড, হকিস্টিক, চাপাতি হাতে নিয়ে দলীয় স্লোগানসহ বানেশ্বর বাজারে অবস্থিত মেসার্স ওসমান আলীর সরকারের সারের দোকানের এসে দোকানের শাটারে লাথি গালিগালাজ। এসময় ওসমান আলীর কলার ধরে বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করে।

সেখান থেকে তারা বানেশ্বর ট্রাফিক মোড় চারঘাট রোডে অবস্থিত বাবু শেখের বাড়িতে ঢুকে তাকে বাবু  লাঞ্ছিতসহ বাড়ির চেয়ার, ফুলের টব, দরজা ভাঙচুর করে।  সেখান থেকে তারা বানেশ্বর সবজি বাজার উপস্থিত হয়ে সুজন (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করে গুরুতর আহত করে।

পরে বানেশ্বর বাজার ট্রাফিক মোড়সহ আশপাশের দলীয় স্লোগানসহ শোডাউন দেওয়ার সময় পুঠিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তারা চলে যায়। বর্তমান বানেশ্বর হাটের টেন্ডারকে কেন্দ্র করে এমপির লোকজনের হামলার শিকার হতে হচ্ছে ব্যবসায়ী সহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থদের। এতে বানেশ্বর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এব্যাপারে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান জানান, পুলিশের সামনেই তারা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। এক সময় পুলিশ নিয়ন্ত্রন করতে না পেরে থানায় জানালে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সেখানে পাঠানো হয়। এরপর তারা চলে যায়। পরে হামলাকারীর অভিভাবকরা এসে ঘটনার জন্য দুখ প্রকাশ করেছেন। তবে এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।