পালটাপালটি সমাবেশ ঘিরে জনভোগান্তি চরমে

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :

শুক্রবার বড় দুদলের পালটাপালটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে ভোগান্তির নগরী হয়ে ওঠে ঢাকা। গণপরিবহণ সংকটে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান। এছাড়া প্রবল বর্ষণে জলমগ্ন রাস্তা ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। তবে অন্যান্য সমাবেশের আগে ঢাকায় অঘোষিত হরতালের আবহ থাকলেও এবার পরিস্থিতি ছিল অনেকটাই ভিন্ন। বিছিন্ন দু-একটি ঘটনা ছাড়া যানবাহন চলাচলে কোথাও বাধার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে মিছিল-শোডাউনে শহরজুড়ে ছিল চাপা আতঙ্ক।

বেলা ১১টায় মালিবাগ রেলগেটে বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন কলেজছাত্র মাহিদুল ইসলাম। যুগান্তরকে তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য মাকে নিয়ে বারডেম হাসপাতালে যাবেন। কিন্তু বাস পাওয়া যাচ্ছে না। আবার এটুকু রাস্তার জন্য সিএনজিতে চারশ টাকা ভাড়া যাচ্ছে। বাস না পেলে শেষ পর্যন্ত সিএনজিতেই যাবেন তিনি।

দুপুরের প্রচণ্ড গরমে মাথায় ভারী ব্যাগ চাপিয়ে খামারবাড়ির রাস্তা ধরে হাঁটছেন বৃদ্ধ জয়নাল আবেদিন। তার বাসা মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনে। কোথায় যাবেন জানতে চাইলে জয়নাল বলেন, কাওরানবাজারে তার সবজির দোকান। ভোরেই বেচাকেনা শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু হিসাব গোছাতে সময় লাগায় দেরি হয় তার। কিন্তু রাস্তায় নেমে বাস পাচ্ছেন না। তাই হেঁটেই ফিরছেন বাসায়।

দুপুর দেড়টায় মগবাজার বারাকাহ কিডনি হাসপাতালেরর সামনে ৪ বছরের মেয়েকে নিয়ে অপেক্ষমাণ চম্পা রানি বিশ্বাস। মেয়ের চিকিৎসা শেষে গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে ফিরতে চান তিনি। কিন্তু রাস্তায় একের পর এক মিছিল দেখে ভয় পাচ্ছেন। তাই পরিস্থিতি বোঝার জন্য আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছেন তিনি।

সমাবেশ ঘিরে পুলিশের কড়াকড়িতে রাজধানীতে ঢোকার মুখেও ভোগান্তির শিকার হন অনেকে। রাজনৈতিক কর্মী সন্দেহে অনেকে দীর্ঘ পুলিশি জেরার মুখে পড়েন। এতে অনেকেই হয়রানির শিকার হন। এছাড়া ঢাকামুখী যানবাহনে তল্লাশির কারণেও দীর্ঘ যানজটে নাকাল হন অনেকে।

ছেলের অসুস্থতার খবরে ঢাকায় ঢুকতে গিয়ে ভোগান্তির মুখে পড়েন কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা এলাকার বাসিন্দা মকবুল হোসেন। শুক্রবার সকালে তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘আমার ছোট ছেলে জিসান বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। পল্টনে সমাবেশ হবে তাই তিনি পোস্তগোলা হয়ে ঢাকায় ঢুকছেন। কিন্তু ব্রিজে ওঠার আগেই পুলিশের তল্লাশিতে বাস থেমে গেছে। ২০ মিনিট ধরে বসে আছেন তিনি।

যানজটে আটকে থাকা কেরানীগঞ্জের কোনাখোলার বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমি মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডে যাব। জরুরি কাজ আছে। কিন্তু এখানে আসার পর পুলিশ গাড়ি থেকে নামিয়ে নানা প্রশ্ন করছে। কোথায় যাব, কার কাছে যাব, কেন বাসা থেকে বের হলাম ইত্যাদি জানতে চায় পুলিশ।