পায়রা বন্দর অর্থনৈতিকভাবে কতটা লাভজনক হবে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দক্ষিণে পায়রা সমুদ্র বন্দরের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসব প্রকল্প বাবদ মোট খরচ ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৭২ কোটি টাকা। যার পুরোটাই বাংলাদেশের রিজার্ভের টাকা দিয়ে তৈরি করা তহবিল থেকে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। যার নাম “বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল”।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বিদেশী অর্থায়নে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। এজন্য রিজার্ভের টাকা দিয়ে এই বন্দরের কাজ কাজ শুরু করা হচ্ছে। এতে ঘরের টাকা ঘরেই থাকবে।”

আগামী ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে এবং এর ফলে বন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে জানাচ্ছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তবে এই পায়রা বন্দর থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাব্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

মোয়াজ্জেম।

তিনি জানান, যে রাজনৈতিক বিবেচনায় সোনাদিয়া থেকে সরিয়ে বন্দরটি পায়রায় আনা হল, সেই দেশগুলো এখন আবার মাতারবাড়ি বন্দরের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে। এইভাবে বার বার গোলপোস্ট শিফট হওয়ায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ব্যয় হচ্ছে, সরকারের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে, রিজার্ভের অর্থ বিফলে যাচ্ছে।

যে ব্যয়টি হতে যাচ্ছে বা সামনে যে ব্যয় অব্যাহত থাকবে নাব্যতা ধরে রাখার জন্য সেই ব্যয় কতোটা যৌক্তিক হবে সেটা সরকারের বিবেচনায় রাখা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশকে ঘিরে আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য অর্থাৎ ভারত, চীন, মিয়ানমার, নেপাল, ও ভুটানের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে এসব বন্দরের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে এই দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য সহযোগিতায় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ কারণে ব্যাপকভাবে আঞ্চলিক বাণিজ্যের যে আশা করা হচ্ছে সেই আশা কম বলে আশঙ্কা করছেন মি. মোয়াজ্জেম।

আঞ্চলিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশ এই বন্দর কতোটা ব্যবহার করবে অর্থাৎ আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্যে বাংলাদেশে কতোটা শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে সেটার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বিশেষ করে নেপাল ও ভুটান তৃতীয় দেশের সাথে বাংলাদেশের মাধ্যমে কতোটা বাণিজ্য করতে পারবে, ভারতের বাণিজ্যের কতোটুকু অংশ বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে হবে, বাংলাদেশের এই বন্দরগুলো চীনের ব্যবহার করার সম্ভাব্যতা কতোটা রয়েছে- এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

সেইসাথে এই বন্দরকে নাব্য রাখতে রক্ষণাবেক্ষণে যে ব্যয় হবে, সরকারের তার জন্য আর্থিক সক্ষমতা রয়েছে কিনা সেটা যাচাই করার ওপরও জোর দেন তিনি।

সূত্র: বিবিসি বাংলা