পাটকল শ্রমিকরা কে কত পাবেন ৩ দিনের মধ্যে জানা যাবে

দেশের ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের প্রায় পঁচিশ হাজার শ্রমিককের চলতি মাসের বেতন এ সপ্তাহের  শেষের দিকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। এ ছাড়া তিন দিনের মধ্যে জানা যাবে পাটকর শ্রমিকরা কে কত পাবেন।

আজ শুক্রবার রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী লেনের বাসভবনে শ্রমিকদের শতভাগ পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার বিষয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এসব কথা জানান।

এ সময় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব কে এম আব্দুস সালাম এবং পাটকল শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, অনেক শ্রমিক দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছেন; কী পাব না পাব জানব কীভাবে? তিনি বলেন, চলতি মাসের বেতন এ সপ্তাহের শেষের দিকে আপনাদের ব্যাংক হিসেবে চলে যাবে। আরো দুই মাস  নোটিশ পিরিয়ড আছে। পরের মাসের প্রথম সপ্তাহে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ওই টাকাও চলে যাবে।

মন্ত্রী বলেন, এরপর বাজেট ক্লিয়ারেন্স হবে। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনদিনের মধ্যে তালিকা তৈরি করতে। এরমধ্যে আপনারা (পাটকল শ্রমিকরা) জেনে যাবেন কে কত পাচ্ছেন না পাচ্ছেন। সেটা আপনারা অবগত হবেন।

প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে ওই সময় প্রধানমন্ত্রী আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তখন তিনি আমাদের বলেন, এই শ্রমিকরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আন্দোলন করেছেন। এক লাখ শ্রমিক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আন্দোলন করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। এ কথা বলতে গিয়ে তিনি কিন্তু চোখের পানি ফেলেছেন। বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিল এরা, এদের তো পুনর্বাসন করতে হবে। এদেরকে আরো ট্রেনিং দেয়া যায় কি-না?। অর্থসচিবকে বলেছেন, এদেরকে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করো, তাদেরকে আমার দরকার, তাদেরকে হারাতে চাই না।

প্রধানমন্ত্রী নিজে পাটকল শ্রমিকদের দায়িত্ব নিয়েছেন জানিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, আমি শ্রমিক ভাইদের বলব, যেখানে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন সেখানে ভাববার কোনো বিষয় নেই। আপনারা খুবই নিরাপদে আছেন, খুব শান্তিতে থাকবেন-এই আমার ধারণা।

এর আগে বৃহস্পতিবার বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১ জুলাই থেকে বন্ধ ঘোষণা করা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের প্রতিজন শ্রমিক গড়ে ১৩ লাখ ৮৬ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫৪ লাখ টাকা পর্যন্ত পাবেন। সরকার তাদের পাওনার অর্ধেক নগদে পরিশোধ ও বাকি অর্ধেক টাকার সঞ্চয়পত্র দেয়া হবে।

এতে আরো জানানো হয়, দেশের সরকারি পাটকলগুলো ১ জুলাই থেকে বন্ধ কার্যকর হচ্ছে। শ্রমিকদের পাওনা এককালীন পরিশোধ করা হবে। শ্রমিকরা শ্রম আইনের ২০০৬ এর ২৬ ধারার উপধারা (৩) অনুসারে ৬০ দিনের মজুরি পাবেন। তার আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ এবং শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে একটি সভা হয়।

লোকসান থেকে বাঁচতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে অবসরে পাঠানো হচ্ছে বলে গত ২৮ জুন ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী।