পাকিস্তানে ধর্ষণবিরোধী আইনে কঠোর শাস্তির বিধান আসছে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

 

পাকিস্তানে ধর্ষণকারী ও যৌন অপরাধীদের জন্য মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রেখে একটি অধ্যাদেশ জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। গতকাল মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির আইন ও বিচারমন্ত্রী ড. ফারুগ নাসিম। তিনি বলেছেন, যেহেতু সংসদ অধিবেশন ছিল না, তাই ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে আইন আরও কঠোর করার জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করা হবে।

আইন মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বিচারমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে আজ বুধবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই দণ্ডে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, নপুংসককরণ, ১০ থেকে ২৫ বছর কারাদণ্ড অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

নপুংসককরণের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো অপরাধীকে রাসায়নিক প্রয়োগের মাধ্যমে কিছু সময়ের জন্য বা একেবারে স্থায়ীভাবে নপুংসক করা হতে পারে। যেসকল অপরাধীরা বারবার অপরাধ করবে, তাদের ক্ষেত্রে খোজাকরণ আদর্শ শাস্তি। এ ধরনের আইন যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই রয়েছে।’

আইনমন্ত্রী নাসিম আরও বলেন, জাতীয় ডাটাবেস ও নিবন্ধকরণ কর্তৃপক্ষ দ্বারা যৌন অপরাধীদের নাম নিবন্ধন করা হবে যাতে কোন অপরাধ সংগঠিত হলে দোষীদের সহজেই গ্রেপ্তার করা যায়।

পাশাপাশি জনগণকে চারপাশের যৌন অপরাধী এবং ধর্ষণকারীদের চিহ্নিত করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

ডনের খবরে বলা হয়, কঠোর শাস্তির ধারণাটি প্রথমে প্রকাশ করেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গত সেপ্টেম্বরে টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ক্রমবর্ধমান যৌন অপরাধ রোধে ধর্ষণকারীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া উচিত। দেশটির মোটরওয়েতে এক গণধর্ষণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

এরপর সিন্ধুর কাশমোর জেলায় এক নারী এবং তার নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনা প্রসঙ্গে এই মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘোষণা করেছিলেন, সরকার একটি কঠোর এবং সর্বাত্মক ধর্ষণবিরোধী অধ্যাদেশ আনবে।

এ ব্যাপারে মানবাধিকার মন্ত্রী শিরীন মাজারি টুইটারে বলেছিলেন, ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতনের অপরাধকে সর্বজনীনভাবে মোকাবিলা করতে এবং পাকিস্তান দণ্ডবিধিতে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর জন্য মন্ত্রিসভা দুটি অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে। এগুলো হলো- অ্যান্টি রেপ (তদন্ত ও বিচার) অধ্যাদেশ ২০২০ এবং পাকিস্তান পেনাল কোড (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২০।

মাজারি বলেন, দুটি আইন অধ্যাদেশ আইনসভা নিষ্পত্তি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিএলসি) দ্বারা চূড়ান্ত করা হবে এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এটি কার্যকর করা হবে।

এর আগে দেশটির তথ্যমন্ত্রী শিবলি ফরাজ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ফেডারেল মন্ত্রিসভা এই অধ্যাদেশকে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে, যা আগামী সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে।

 

সূত্র: আমাদেরসময়