পাকিস্তানকে সেমির টিকিট উপহার দিল শ্রীলঙ্কা!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের ক্যাচটা ছেড়ে যেন সেমিফাইনালের স্বপ্নটাকে হাতছাড়া করলেন থিসারা পেরেরা। ৩৯ তম ওভারে ৭ উইকেট হারানো পাকিস্তান তখন জয় থেকে ৪০ রান দূরে।

হতাশায় ভেঙে পড়লেন বোলার লাসিথ মালিঙ্গা। মালিঙ্গার ফিরতি ওভারে (৪১তম) আবারও একই দৃশ্যের অবতারণা। এবার সরফরাজের ক্যাচ ছাড়লেন বদলি ফিল্ডার সেকুজে প্রসন্ন। মালিঙ্গাকে স্বান্তনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না কেউ। হেরে বসা ম্যাচ ৩ উইকেটে জিতে নিল পাকিস্তান। না, আসলে পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল উপহার দিল অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের শ্রীলঙ্কা।

লঙ্কানদের দেওয়া ২৩৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেন পাকিস্তানের দুই আজহার আলী এবং ফখর জামান। দুজনে মিলে ৭৪ রানের ওপেনিং জুটি উপহার দেন। পাকি শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন দারুণ ফর্মে থাকা নুয়ান প্রদীপ। ফখর আজমকে গুনারত্নের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। আউট হওয়ার আগে বিধ্বংসী ব্যাট চালিয়ে ৩৬ বলে ৮ চার এবং ১ ছক্কায় ৫০ রান করেন ফখর। এরপর আর কোনো জুটি দাঁড়াতে পারেনি পাকিস্তানের। দলীয় ৯২ রানে বাবর আজমকে (১০) দ্বিতীয় ফেরান নুয়ান প্রদীপ। থিসারা পেরেরার শিকার হয়ে ১ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন মোহাম্মদ হাফিজ। তখনও টিকে ছিলেন ৩৪ রান করা আজহার আলী। তবে সুরঙ্গা লাকমল তার এই প্রতিরোধ ভাঙেন।

এরপরই মঞ্চে আবির্ভাব গতিদানব লাসিথ মালিঙ্গার। বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগেই শোয়েব মালিককে ১১ রানেই থামিয়ে দেন তিনি। ধস নামে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে। নুয়ান প্রদীপের তৃতীয় শিকার হন ইমাদ ওয়াসিম (৪)। ১৫ রান করে ফাহিম আশরাফ রানআউট হয়ে গেলে আরও বিপদে পড়ে পাকিস্তান। এরপর বোলার মোহাম্মদ আমিরকে নিয়ে লড়াই করতে থাকেন অধিনায়ক সরফরাজ। লঙ্কান ফিল্ডারদের ক্যাচ মিসের মহড়ার সুযোগে অর্ধশতাধিক রানের জুটি গড়েন দুজন। হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন সরফরাজ। তাদের অবিচ্ছিন্ন ৬৯ রানের জুটিতে শেষ হাসি হাসে পাকিস্তান।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২৬ রানে লঙ্কানদের প্রথম উইকটের পতন ঘটে। জুনায়েদ খানের বলে শোয়েব মালিকের হাতে ধরা পড়েন ওপেনার গুনাথিলাকা (১৩)। এরপর জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস এবং নিরোশান ডিকাভিলা। জুটি ৫৬ রানে পৌঁছতেই হাসান আলীর আঘাত। ২৯ বলে ২৭ রান করা কুশল মেন্ডিসকে সরাসরি বোল্ড করে দেন তিনি। ১ রানের ব্যবধানে ফাহিম আশরাফের বলে বোল্ড হয়ে যান নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান দিনেশ চান্ডিমাল। তিনি রানের খাতা খুলতেই পারেননি।

শুরুতেই উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কাকে পথ দেখিয়েছিলেন অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ এবং ওপেনার নিরোশান ডিকাভিলা। ৮৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ৪র্থ উইকেটে ৭৮ রানের জুটি গড়েন দুজন। সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ডিকাভিলা। কিন্তু সেটা আর হলো না। দলীয় ১৬১ রানে মোহাম্মদ আমির বোল্ড করে দিলেন ৫৪ বলে ৩৯ রান করা লঙ্কান অধিনায়ককে। এরপর শুরু হলো যাওয়া আসার পালা। স্কোরবোর্ডে ১ রান যোগ হতেই ধনঞ্জয় ডি সিলভাকে ফেরালেন জুনায়েদ খান।

আশার আলো হয়ে জ্বলতে থাকা নিরোশান ডিকাভিলাকে পরের ওভারেই সরফরাজ আহমেদের গ্লাভসবন্দী করলেন আমির। আউট হওয়ার আগে ৮৬ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৭৩ রান করেন এই ওপেনার। থিসারা পেরেরাকে ফিরিয়ে ১৬৭ রানে লঙ্কানদের ৭ম উইকেটের পতন ঘটান জুনায়েদ। ৮ম উইকেটে ৪৬ রানের জুটি গড়ে দলের রান ২০০ পার করেন সুরঙ্গা লাকমল এবং অ্যাশলে গুনারত্নে। ৪ বল বাকী থাকতেই ২৩৬ রানে অলআউ হয় শ্রীলঙ্কা। জুনায়েদ খান এবং হাসান আলী ৩টি করে উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ আমির এবং ফাহিম আশরাফ। সূত্র: কালের কণ্ঠ