পরীক্ষামূলক ড্রাগন চাষে লাখপতি চাঁন মিয়া

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি:  উত্তরেরর শস্য ও মৎস্য ভান্ডার বলে পরিচিত বগুড়ার আদমদীঘি। উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ কৃষি ও মৎস্যজীবী। কেউ জমিতে ধান, আবার কেউ কেউ মাছ চাষে জড়িয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ব্যতিক্রম খামারি চাঁন মিয়া। তিনি হেঁটেছেন ভিন্ন পথে। চাষ করছেন ড্রাগন ফলের। ইতিমধ্যে তিনি পরীক্ষামূলক ভাবে ড্রাগন চাষ করে প্রায় লাক্ষাধীক টাকা লাভবান হয়েছেন।

সম্প্রতি চাঁন মিয়ার ড্রাগন ফলের বাগান ঘুরে দেখা গেছে, পাঁচ ফুট উচ্চতার খুঁটিতে পেঁচিয়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের গাছ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ড্রাগনের চাষপদ্ধতি জেনে নিচ্ছেন। আগতদের মধ্যে যারা শখের বসে ড্রাগন চাষ করতে চাচ্ছেন তাদের মাঝে তিনি চারা সরবরাহ করছেন।

বাগানে কথা হয় চাঁন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, মুরগি খামারের পাশাপাশি গত ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে পরীক্ষামূলক ভাবে বাড়ির পাশে মাত্র ১০ শতাংশ পতিত জমিতে ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেন। চারা রোপণের এক বছর তিন মাসের মাথায় গাছে ফল আসে। এসব ফল আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশিদের খাওয়ানোর পরও বিক্রি করে প্রায় এক লক্ষ টাকা পেয়েছেন। ভালো ফলন ও লাভবান হওয়ায় এবার তিনি উপজেলার কুন্দগ্রাম ইউনিয়নের কড়ইগ্রামের কারিউল ইসলাম নামের এক কৃষকের সাথে ১৫ বিঘা জমিতে যৌথ ভাবে ড্রাগন চাষে নেমেছেন। দ্বিতীয় বারের মতো ২০১৯ সালের শেষের দিকে অন্যের জমি বন্ধকী (লিজ) নিয়ে তারা ড্রাগন চাষাবাদ শুরু করেছেন। বাগান সৃজনের বিপরীতে প্রতি বিঘায় এবার তাদের খরচ হয়েছে ৮০-৯০ হাজার টাকা। চলতি বছরের শেষের দিকে ফল পাবেন বলে তারা আশাবাদী। তার দাবি, ড্রাগন গাছের রোগ-বালাই কম, কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। ফলে ড্রাগন চাষে ঝুঁকি কম, ফলের দামও বেশি দেখে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন। কৃষি ব্যাংক অথবা বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ড্রাগন চাষের বিপরীতে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করলে কৃষকরা ড্রাগন চাষে ঝাঁপিয়ে পড়তেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, চাঁন মিয়ার ড্রাগন চাষ অন্যদের উৎসাহ দিচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষে থেকে তাকে পরামর্শ দেয়া এবং তার বাগানে নজরদারি রয়েছে। তাছাড়া সব ধরনের মাটিতে ড্রাগন চাষ হয়। তবে উঁচু জমিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিন মিটার পরপর গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়। বছরের যেকোনো সময় চারা রোপণ করা যায়। তবে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলে ভালো। সিমেন্ট অথবা বাঁশের খুঁটিতে গাছ বেঁধে দিতে হয়। গাছে ফুল আসার ২০-২৫ দিনের মধ্যে ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন হয় ২০০-৬০০ গ্রাম। ১২-১৮ মাস বয়সী একটি গাছে ৫-২০টি ফল ধরে। পরিপক্ব একটি গাছে সর্বোচ্চ ৮০টি ফল পাওয়া যায়। ছাদবাগানের টবেও ড্রাগন ফল উৎপাদন করা যায়।

স/রি