পরিবারের প্রতি বিশেষ ভূমিকা রাখায় বারসিক সম্মাননা পেল ৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নে বিএডিসি সাব সেন্টার হল রুমে যৌথপরিবার ও প্রবীণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হযেছে। আজ মঙ্গলবার ‘যৌথ পরিবার সমুন্নত হলে প্রবীণের সুখ শান্তি নিশ্চিত হবে’ শিরোনামে উক্ত সমাবেশে বড়গাছি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক প্রবীণ ও তাদের পরিবারের সদস্য অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশে বড়গাছি ইউনিয়নের মধ্যে নিজের পরিবারের প্রবীণ পিতা মাতার সুখ শান্তি ও সকল চাহিদা পূরনে বিশেষ  ভূমিকা থাকায় বারসিকের পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ্য সন্তানদের শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা স্বরুপ শ্রেষ্ঠ্য সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। মোট ৮টি ক্যাটাগড়িতে ৭জন ব্যক্তি  ও একটি প্রতিষ্ঠানকে বারসিক সম্মানা তুলে দেয়া হয়।

নিজের পরিবারে প্রবীণ পিতা মাতার সুখ শান্তি ও সকল চাহিদা পুরণে বিশেষ অবদান রাখায় শ্রেষ্ঠ্য সন্তানের সম্মাননা পান বড়গাছি ইউনিয়নের মালপাড়ার মোঃ বাবুল মিয়া, হাটপাড়ার মোঃ মোস্তাক আলী, পশ্চিম পাড়ার মোঃ নাসির উদ্দিন।  নিজের পরিবারে সকলে একসাথে শান্তিপূর্ণভাবে থেকে নবীন ও প্রবীণের আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় শ্রেষ্ঠ্য প্রবীণ সম্মাননা পান মাধবপুর গ্রামের আব্দুল জব্বার মিয়া, মো: হুজুর আলী, মোঃ সিদ্দিকুর রহমান। নিজে প্রবীণ হয়েও এলাকার অন্যান্য প্রবীণদের নিয়ে প্রবীণ চত্ত্বরের জায়গা,একত্রিত ও সচেতনতার ব্যবস্থা করাসহ এলাকার প্রবীণদের একত্রিত করায় বিশেষ অবদান রাখায় শ্রেষ্ঠ্য প্রবীণ বন্ধু সম্মাননা পান চাষী রহিমুদ্দিন সরকার। এবং প্রবীণদের উপযোগী চিত্তবিনোদন এবং প্রবীণবান্ধব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নিয়মিত আয়োজনে বিশেষ অবদান রাখায়  পবা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদকে প্রবীণবান্ধব সংস্কৃতিক সম্মাননা তুলে দেয়া হয়।

বেসরকারী উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক, বড়গাছি কৃষক ঐক্য এবং পবা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের যৌথ আযোজনে সমাবেশে  বক্তারা বলেন-  দিনে দিনে যৌথ পরিবার কমে যাবার কারনে প্রবীণরা নানা সমস্যায পড়ে যাচ্ছে। তারা একাকিত্ববোধ করছে।  ছেলে বিয়ে করে একা হবার কারনে প্রবীণ পিতা মাতাকে ছেড়ে আলাদা পরিবার গড়ে তোলে। এর ফলে প্রবীণদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

সমাবেশে জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত চাষী রহিমুদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে মাঠ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন পাঠ করেন, বারসিক বরেন্দ্র অঞ্চল সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন- “ আধুনিক সমাজ বিবর্তনের কারনে মানুষের জীবনযাত্রা পরিবর্তন হয়েছে, যার ফলে যৌথ পরিবার ভেঙ্গে একক পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এর ফলে পরিবারে প্রবীণরা নানা সমস্যা পড়ে যাচ্ছে। আবার দেখা যায় যৌথ পরিবার কমে আসছে এবং মানুষজন গ্রাম ছেড়ে শহরে বা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে অনেক মা-বাবাই অরক্ষিত হয়ে পড়ছে। অরক্ষিত এই প্রবীণদের সেবা দেয়ার জন্য যে নতুন নতুন ব্যবস্থা প্রয়োজন তা গড়ে উঠছেনা। প্রবীণরা মানসিক প্রশান্তিসহ আরো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।

তিনি বলেন- প্রবীণদেরকে দেখভাল করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। এতো কিছুর ফলেও এখনো অনেক পরিবার, সন্তান আছে তারা নিজের পরিবারের প্রবীণদের সকল চাহিদা পূরণ করছেন, সুস্থ্য সুন্দর রাখতে প্রবীণদের সহায়তা করছেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, পবা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের আহবায়ক রায়হান জুয়েল । এ সময় উপস্থিত ছিলেন বারসিকের কর্মসূচী কর্মকর্তা জাহিদ আলী, ব্রজেন্দ্র নাথ প্রমুখ।

স/অ