পবা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার আফিস: বরখাস্তকৃত নৈশপ্রহরীর দাপট, দিচ্ছেন হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পেশায় তিনি একজন নৈশপ্রহরী। তবে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। উল্টো চাকুরি ফিরে পেতে রাজশাহী পবা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার বাদল কৃষ্ণ বিশ্বাসকে হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। অথচ নৈশপ্রহরী কবিরুল ইসলাম ওই অফিসের দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী।

জানা গেছে, রাজশাহী পবা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের এক কর্মচারী কবিরুল যিনি ২০১৩ সালে অস্থায়ী ভিত্তিতে ডিস্িটক রেজিস্ট্রার ( ডিআর) কতৃক নৈশ প্রহরী হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তবে নৈশ প্রহরীর্ হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হলেও সেই সাল থেকেই সে সাব-রেজিষ্টার অফিসের রেজিষ্ট্রিকৃত দলিলের হিসেব-নিকাশ, সরকারি পে-আর্ডার ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথিসমূহের কাজ করে আসছেন। এছাড়া টাকার বিনিময়ে তার নৈশ প্রহরীর কাজটি উপজেলা দলিল লেখক সমিতির নৈশ প্রহরীকে দিয়ে করিয়ে আসছেন।

এছাড়া রাতে ডিউটি না করে নিজেকে অফিস স্টাফ হিসাবে পরিচয় দিয়ে আসছেন জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা সাধারন জনগণকে। আর বিভিন্ন সময় অর্থের বিনিময়ে অফিসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথিসমূহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে সরবারহ করে আসছেন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ডিস্টিক রেজিস্ট্রার (ডিআর) কতৃক এক আদেশ সূত্রে বেরিয়ে আসে তার অনিয়মের কথা।

জানা গেছে, ২৪ জুন ২০২০ সালে রেজষ্ট্রিকৃত ৪৪৫৬/২০ নং বিক্রয় কবলা দলিল ঘষামাজা করে দলিলের বিক্রয় কবলা অংশ তুলে ফেলে হেবা ঘোষণা করে ১লাখ ১২হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। পরবর্তিতে আবারো ২ জুলাই ২০২০ তারিখে একই ভাবে রেজষ্ট্রিকৃত ৪৭৭৫/২০ বিক্রয় কবলা অংশ তুলে হেবা ঘোষণা করে ১লাখ ৫০হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

এই দুটি দলিলের অনিয়মের তদন্তকালে সংশ্লিষ্ট দলিল লেখকের বক্তব্য ও অন্যান্য একাধিক দলিল লেখকের বক্তব্যে প্রকাশ্য এবং গোপনীয় তদন্তকালে এই অপকর্মের সাথে সাব-রেজিষ্টার অফিসের দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারী (নৈশ প্রহরী) কবিরুল ইসলাম জড়িত বলে প্রমান পাওয়া যায়। ফলে তাকে রাজশাহী জেলা-রেজিস্ট্রার ইলিয়াস হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশ বলে তাকে বরখাস্থ কারা হয়।

এদিকে, বরখাস্থ হওয়ার পরও কোন আদেশের তোয়াক্কা না করে সেই কবিরুল এখনো অফিসের দাপ্তরিক কাজ করে চলেছেন। এমনকি আদেশ অনুযায়ী তাকে দাপ্তরিক কাজ থেকে বিরত থাকার কথা বলায় পবা উপজেলা সাব-রেজিষ্টার বাদল কৃষ্ণ বিশাসকে নানা ভাবে হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে সেই নৈশ প্রহরী কবিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

জানতে চাইলে কবিরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে। আমি কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পবা সাব রেজিস্ট্রার বাদল কৃষ্ণ বিশাস বলেন, আমাকে দৈনিক মজুরী ভিত্তিক নৈশ প্রহরী কবিরুল ইসলাম বভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে। তাকে আদেশ অনুযায়ী কাজ থেকে বিরত থাকতে বলায় সে তার চাকুরি ফিরে পেতে এসব হুমকি দিয়েছে।

পে-অর্ডার বিষয়ে তিনি বলেন, সময়মত দুটি দলিলের পে-অর্ডার সরকারি খাতে জমা দেননি। তবে পরবর্তীতে এ বিষয়ে তদন্ত চলাকালিন সময়ে কেরানির মাধ্যমে পে-অর্ডার জমা করা হয় বলেও তিনি দাবি করেন।

রাজশাহী জেলা রেজিস্টার মোঃ ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘পবা সাব রেজিস্ট্রার বাদল কৃষ্ণ বিশাস এ বিষয়ে আমাকে অবগত করেছেন। অতি দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

স/আর