পবায় ইউপি অফিসে বরকে আটকে রাখলেন চেয়ারম্যান, সকালে মরদেহ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক:


দেন মোহরের টাকার জন্য বর মোফাজ্জলকে (২৫) মেরে ফেলা হয়েছে এমন অভিযোগ ‍তুলেছেন নিহতের বড়ভাই তোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করা হয়েছে।’



আজ রোববার (২৯ নভেম্বর) সকালে নিহত বর মোফাজ্জলের মৃত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় নিহতের দোলাভাই রাসেল আহম্মেদ সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে আটমঙ্গলার জন্য বর মোফাজ্জল ও তার স্ত্রীকে শ্বশুরা বাড়ির লোকজন নিয়ে আসেন। সেই রাতে বর মোফাজ্জলকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া নিয়ে নিজেদের মধ্যে বাকবিতান্ডা হয়। পরে বরের পরিবাকে বিষয়টি জানানো হয়।

তিনি আর বলেন, পরিবারের লোকজন শনিবার সকালে আসে। এসময় চেয়ারম্যান বজলে রেজবি আল হাসান মুঞ্জিলের উপস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বসা হয়। এক পর্যায়ে কনে মোসা. রিয়ার (১৯) পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়- তারা মেয়েকে মোফাজ্জলের ভাত খেতে দেবে না। এর পরে তারা দেন মোহরের টাকার দাবি করেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এসময় তারা বর মোফাজ্জলকে আটকে রাখে।


ভিডিওটি দেখুন: সিল্কসিটিনিউজ


দোলাভাই রাসেল আহম্মেদ বলেন, চেয়ারম্যানের কথায় বর মোফাজ্জলকে পবার-৪ হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের অফিস কার্যালয়ে বন্ধ করে রাখা হয়। এর পরে বরের দুইভাইসহ কয়েকজন শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিতে দেখতে আসে। কিন্তু দেখা করতে দেওয়া হয়নি বরের সাথে। চেয়ারম্যনের কথা- ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে বর মোফাজ্জলকে নিয়ে যেতে হবে। এই কথায় তারা ফিরে আসেন।

তিনি আরও বলেন, আজ রোববার ভোরের দিনে পবার-৪ হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তানোরের চান্দুড়া ইউনিয় পরিষদের সচিবকে জানায়। এর পরে সচিব বিষয়টি বাড়িতে জানালে। পরিবারের লোকজন মরদেহের কাছে আসেন।

জানা গেছে, দেনমোহরের এক লাখ ২০ হাজার টাকা মোহরানায় তাদের বিয়ে হয় গত ২০ নভেম্বর। এর পরে সবকিছু ঠিকঠাকই ছিলো বলে ছেলের বড় ভাইয়ের দাবি। তবে মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলের পরিবারকে জানানো হয়েছি ছেলে কাজ (কর্ম) করে না। তাই তারা ছেলে ভাত খেতে দেবেন না।

নগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (কাশিয়াডাঙ্গা-জোন) আরেফিন জুয়েল জানায়, মরদেহ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, চেয়ারম্যান যে কাজটি করেছেন এটি দুঃখজনক। তিনি এটি করতে পারেন না।

প্রসঙ্গত, আজ রোববার সকালে পবার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের অফিস কক্ষ থেকে মোফাজ্জলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই কক্ষে জানালার গ্রীলে রশির সাথে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মোফাজ্জলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

স/আ