পদ্মায় স্পিডবোট ডুবে ২৬ জন নিহত: প্রধান আসামি গ্রেফতার

মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মায় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহতের মামলায় প্রধান আসামি চালক শাহ আলমকে (৩৮) গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসা শেষে সুস্থ হলে ঢাকার শাহবাগ পুলিশের হেফাজত থেকে ওই স্পিডবোটচালককে রোববার সন্ধ্যায় শিবচর চরজানাজাত নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুর রাজ্জাকের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।

সোমবার সকালে স্পিডবোটচালক ঘাতক শাহ আলমকে আদালতে তোলা হবে।

এর আগে গত ৪ মে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় শাহ আলমকে প্রধান আসামি করে স্পিডবোটের দুজন মালিক ও শিমুলিয়াঘাট ইজারাদারসহ চারজনকে এজাহারভুক্ত আসামি করে শিবচর থানায় চরজানাজাত নৌপুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে, যার মামলা নং- ০৭(০৫) ২১ ধারা- ২৮০/৩০৪-ক/৩০৪ (সংযোজিত) ৩৩৮/১৮৮/১০৯ পেনাল কোড। এজাহারভুক্ত আরও দুই আসামিকে পুলিশ এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি।

চরজানাজাত নৌপুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ মো. আবদুর রাজ্জাক জানান, গত ৩ মে সকালে কাঁঠালবাড়ীর বাংলাবাজার পুরনো ঘাটের পদ্মা নদীতে বালুবোঝাই একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে স্পিডবোট ডুবিতে তিন শিশুসহ ২৬ জনের মৃত্যু হয়। এ সময় পাঁচ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

ওই সময় চালক গুরুতর আহত হন। তাকে ওই দিন শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে আবার ঢাকা মেডিকেলে (ঢামেক) চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।

দুর্ঘটনার পর পুলিশ চালককে গ্রেফতার না করলেও তাকে বিশেষ নজরদারিতে রাখে। চালক শাহ আলম দীর্ঘ ১২ দিন পুলিশি প্রহরায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। চালক শাহ আলম রোববার শারীরিক কিছুটা সুস্থ হলে ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) তাকে  রাত ৮টার দিকে ছাড়পত্র দেয়।

পরে শাহবাগ পুলিশের হেফাজতে থাকা শাহ আলমকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চরজানাজাত নৌপুলিশ স্টেশনের উপপরিদর্শক (এসআই) আল আমিন সরকার নিয়ে আসেন।

নৌপুলিশ স্টেশনের এসআই আল আমিন সরকার জানান, স্পিডবোটের চালক শাহ আলমের নিজের স্থায়ী কোনো ঠিকানা পাওয়া যায়নি। সে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার ভাতা ঈদগাহপুর গ্রামের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকে। তার নিজস্ব কোনো বাড়িঘর নেই। চালক শাহ আলমের বাবার নাম আবুল কালাম আজাদ।

এ ছাড়া স্পিডবোটের মালিক চান্দু মোল্লা ওরফে চান মিয়া মৃধাকে গত ৯ মে র্যা ব আটক করে। পরে তাকে মাদারীপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়। পুলিশ রিমান্ড আবেদন করলেও ঈদের ছুটির কারণে ওই সময় শুনানি হয়নি।

তবে আগামী ১৮ মে আদালতে স্পিডবোটের মালিক চান্দু মোল্লার রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে বলে চরজানাজাত নৌপুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ মো. আবদুর রাজ্জাক নিশ্চিত করেন।

আসামি চান্দু মোল্লা ওরফে চান মিয়া মৃধা মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের জসলদিয়া গ্রামের মৃত আনু মৃধার ছেলে।

শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্পিডবোটের চালক শাহ আলমকে রাতে শিবচর থানাহাজতে রাখা হয়েছে। সোমবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

 

সুত্রঃ যুগান্তর