পদ্মার চরে আশ্রয়হীন শতাধিক মানুষ

আমানুল হক আমান:
রাজশাহীর বাঘার পদ্মার চরের শতাধিক মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। অব্যহত নদী ভাঙনে তারা দিশাহারা হয়ে পড়েছে। পদ্মার চকরাজাপুর চরের শতাধিক পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতেই বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বছর বছর নদীর পাড়ের এইসব ছিন্নমূল মানুষের দুঃখের চিৎকার কারো কানেই পৌঁছায় না।

 
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পদ্মার উত্তাল ঢেউয়ের ধাক্কায় রক্ষা পায়নি চকরাজাপুর চরের সিদ্দিক হোসেন, মান্নান শেখ, আজিজ মেলেটারি, জয়নাল হোসেন, শাহীন হোসেন, নিহাজ মোল্লা, মজিদ মোল্লা, আমজাদ হোসেন, আকরাম হোসেন, ফেদু সরকার, জয়নাল সরকার, পলান হোসেন, সুবান আলী, ইয়াকুব আলী, ইকরাম হোসেনসহ শতাধিক পরিবারের বাড়ি-ঘর। গত তিন সপ্তাহের মধ্যে রাক্ষুসী পদ্মা কেড়ে নিয়েছে তাদের সবকিছু। মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁই হারিয়ে তারা এখন দিশাহারা। ফলে তারা পরিবার নিয়ে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে।

 
চকরাজাপুর এলাকার মোস্তাক আহম্মেদ শিকদার বলেন, গত কয়েক দিনে রাক্ষুসী পদ্মা গিলেছে বিঘার পর বিঘা ধান, পাট, আবাদি জমি, গাছপালা। ভাঙনের শিকার এইসব মানুষদের সহযোগিতা তো দূরের কথা শান্তনা দেবার মতও কেউ নেই। বারবার সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে ভাঙন ঠেকানোর আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সেই ভোটের সময় দেখা হলেও সবহারা এসব মানুষের এই মহাবিপদে এখন পর্যন্ত পাশে কেউই দাঁড়ায়নি।

 
এদিকে অব্যাহত ভাঙন থেকে বাড়ি-ঘর সরানোর তাড়ায় এসব পরিবারের ভালো খাবারের নিশ্চয়তাও নেই। পূর্ব চকরাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেওয়ার শওকত জামান বলেন, ফসলী জমিসহ গাছ-পালা, বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছে শতাধিক পরিবার। তারা এখন ঘরবাড়ি শরাতে ব্যস্ত। তবে তাঁর বিদ্যালয়টিও হুমকির মধ্যে রয়েছে। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়টি দ’ুবার স্থানান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি ।

 
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিযুল আযম বলেন, নদী ভাঙনের বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তবে চরের মানুষ গরু ছাগল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।

 
গত ৩০ জুলাই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম দুস্থদের মাঝে ১০ কেজি চাউল, দুই কেজি চিড়া ও আধা কেজি গুন ত্রান হিসেবে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নদী ভাঙন পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করা হচ্ছে।
স/শ