পদ্মার চরের সৌন্দর্যও টানছে বিনোদনপ্রেমীদের: বাড়ছে ছিনতাই

তারেক মাহমুদ:

রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় চারিদিকে জেগে উঠেছে সৌন্দর্যে ভরা চর। আর চারদিকে চরের মাঝে প্রিয় মানুষদের সাথে সুন্দর মুহুর্তগুলো আরো বোশি সুন্দর করে কাটাতে ঘুরতে আসছেন বিনোদনপ্রেমী মানুষগুলো।

 

  • পদ্মার পাড়ে গিয়ে তাকালেই দেখা মিলবে এসব বিনোদনপ্রেমীদের ভীড়। প্রতিদিন পরিবার পরিজন বন্ধুবান্ধব মিলে সবাই আড্ডায় মেতে উঠেন প্রিয় এই পদ্মার চরে। বর্ষাকালে পদ্মার চরগুলো চারিদিকে পানিতে ডুবে থাকায় বিনোদন প্রেমীরা নদীর পাড়েই আড্ডা দিয়ে থাকেন।

 


আর এখন চর শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে গোটা চর যেন এক মায়াবি সৌন্দর্যের হাতছানি দিয়ে ডাকে দর্শণার্থীদের।

 

নগরীর একদম প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় মানুষের পছন্দের সুস্থ বিনোদনের জন্য অনেক আগে থেকেই প্রিয় এই পদ্মার চর।

  • সকাল থেকে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে নামে সন্ধ্যা তবুও বিনোদনপ্রেমী মানুষদের এ চরে আনা-গোনা যেন শেষ হতে চাই না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানে বাড়তে থাকে মানুষের ঢল। তাই প্রতিদিনই গোটা চরে থাকে বিনোদনপ্রেমেীদের উপচে পড়া ভিড়। নগরীর আলুপট্টি থেকে পদ্মাগাডের্ন, বিজিবির অবকাশকেন্দ্র, বিজিবি পার্ক র্টি বাঁধ সহ সকল জায়গায় দেখা যায় বিনোদন পিপাশু মানুষের ঢল।

এদিকে এই বিনোদন প্রেমেীদের সরলতার সুযোগে ফাঁদ পেতে রয়েছে কিছু সিন্ডিকেট ছিনতাইকারীরা।  বিভিন্নভাবে বিনোদনপ্রেমীদের জিম্মি করে ছিনতাইকারীরা টাকা পায়সা, মোবাইল, মেয়েদের সোনার গহনা ইত্যাদি ছিনিয়ে নিচ্ছে। এতে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়ছেন বিনোদনপ্রেমীরা।

 

  • প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, কেউ কেউ জোড়ায় জোড়ায় পদ্মার ওই পারে যান। আর এরাই মূলত বেশি- শিকার হন ছিনতাইয়ের। প্রেমিক যুগলদেরই টার্গেট করে সিন্ডিকেট ছিনতাইকারীরা। পরে সুযোগ বুঝে বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে তাদের কাছে থেকে ছিনতাই করা হয়। ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া বেশিরভাগই মূলত শহরে নতুন নতুন শিক্ষর্থী। এদের টার্গেট করে ছিনতাইয়ের কবলে ফেলানো হয়।

 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকবর আলী বলছিলেন, ‘পদ্মায় ভরা পানি বা চর যাই থাকুক না কেন, এখানকার সৌন্দর্য কাছে টানে। তাই সুযোগ পেলেই ছুটে আসি এখানে সময় কাটাতে। কখনো কখনো বই সঙ্গে নিয়ে এসে চরের মাঝে বা পদ্মার পাড়ে বসেই পড়তে শুরু করি। যেন মায়ার জালে বেধে রাখে এ পদ্মার পাড় আর চর।’

 

  • রাজশাহী নগরীর বাসিন্দা হুসেইন আলী বলছিলেন, এখানে সুযোগ পেলে মানুষ দিন-রাত সময় কাটাতে পারবে। বিনোদনপ্রেমীদের ভীড়ও শেষ হতে চাইবে না। কিন্তু সন্ধ্যা নামার আগে আগেই বা দিনে-দুপুরে সুযোগ বুঝে বিনোদনপ্রেমীদের নিকট থেকে যা পাচ্ছে তাই চিনিয়ে নিচ্ছে ছিনতাইকারীরা। এতে করে চরের মাঝে বিনোদনপ্রেমীদের মাঝে অনেকটাই আতঙ্ক থাকে।

ভূক্তভোগী একজন যুবক সিল্কসিটিনিউজকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত শুক্রবার বিকেলে পদ্মার চরে তিনি তার বান্ধবীকে নিয়ে বেড়াতে যান পদ্মার চরের মাঝে। তারা বসে গল্প করছিলেন-এসময় দুজন যুবক এসে অশ্লীলভাবে তাদের উদ্দেশ্যে কথা বলতে শুরু করে। একপর্যায়ে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে যুবকটির কাছে থাকা মানিব্যাগ কেড়ে নিয়ে জোর করে সব টাকা বের করে নেয়।

 

যুবকটি আরো জানান, তার মানিব্যাগে ৮০০ টাকা ছিল। ওই টাকা নিয়ে মোবাইল ফোনটিও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে ফোনটি কম দামের হওয়ায় সেটি আর নেয়নি ছিনতাইকারীরা। তাদের এমন আচরণে যুবকটির সঙ্গে থাকা তার বান্ধবী কাঁদতে শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জেলে সিল্কসিটি নিউজকে বলছিলেন, এখানে নগরীর পাঠানপাড়া, দরগাপাড়া, শিপাইপাড়া শ্রীরামপুর, ফুদকিপাড়াসহ পদ্মা পাড়ের আশে-পাশের কয়েকটি সিন্ডিকেট ছিনতাইকাজে জড়িত। তারা প্রেমিকযুগল দেখে টার্গেট করেই ছিনতাই করে। যেন চর থেকে উঠে এসে কাউকে কিছু বলতে পারে না।

 

  • আরেক প্রত্যাক্ষদর্শী জানান, পদ্মার চরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে কখনো কখনো বখাটেদের কবলেও পড়তে হয় প্রেমিকযুগলদের। ফলে ঘুরতে এসে বিভ্রান্তিকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে তাদের।

 


বিকালটা যেমন তেমন সন্ধ্যায় কেউ থাকলে বেশির ভাগই দর্শনার্থী ও জুটিদের পড়তে হয় ছিতাইয়ের কবলে।

 

তবে নগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম জানান, পদ্মার চর এবং পদ্মার পাড়ে নিয়মিত পুলিশ টহল দেয়। কেউ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার কবলে পড়লেই তোদের উচিত পুলিশকে জানানো। কিন্তু কেউ এসব ঘটনার শিকার হয়েও যদি পুলিশকে ইনফর্ম না করে, তাহলে আমাদের কিছুই করার থাকে না। তারপরেও পুলিশ সজাগ রয়েছে যেন ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন।
স/আর