পণ্যের গুণগত মান ঠিক রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

মাছসহ বিদেশে রফতানিযোগ্য পণ্যের গুণগত মান ঠিক রাখতে ব্যবসায়ী ও রফতানিকারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সামান্য মুনাফা করতে গিয়ে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করবেন না। নিজের বিপর্যয়ও যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজনটা কী ভেজাল করার। দাম যদি বেশিও হয় মানটা ঠিক রাখুন। এটা শুধু মাছ রফতানির ক্ষেত্রেই নয়, রফতানিযোগ্য সব পণ্যের ক্ষেত্রে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।’

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৬ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। কৃষিবিদ ইন্সিটিটিউটে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৎস্যমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক। মৎস্য খাতের ছয়টি ক্ষেত্রে  অবদানের জন্য ২০ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণপদক এবং রৌপ্যপদসহ নগদ অর্থ বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাছ উৎপাদনের জন্য আমরা গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। এর সুফল আমরা পাচ্ছি। নানা জাতের মাছ চাষ করা হচ্ছে এবং তা রফতানি করা যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুষ্টি নিশ্চিত করতে মাছসহ তরিতরকারি-সবজি উৎপাদনকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। এজন্যই সব সবজি এখন বারো মাস পাওয়া যায়। এগুলো গবেষণারই ফল।’

মাছে-ভাতে আমরা বাঙালি-এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যত কিছুই খাই না কেন মাছ-ভাত না খেলে কারোর আত্মতৃপ্তি হয় না। আমাদের দেশে যে পরিমাণ হাওর-বাওড়, নদী-নালা আছে তাতে মৎস্য উৎপাদনে বর্তমানে আমরা চতুর্থ স্থানে রয়েছি। আমরা প্রথম স্থানে আসতে পারি।’

মাছের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মাংসের চেয়ে মাছের পুষ্টিগুণ বেশি। আমাদের দেশের মানুষ যে পরিমাণ অপুষ্টিতে ভুগছে মৎস্য চাষ বাড়িয়ে দিয়ে আমরা সেই অপুষ্টি দূর করতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাছকে ফরমালিনমুক্ত করতে আমরা সফল হয়েছি। এছাড়া ফরমালিনের অপব্যবহার রোধ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত মৎস্য খাতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রায় ৪১ লাখ বাড়তি লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। মৎস্যজীবী ও চাষীদের আয় ৩০ ভাগের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫-১৬ সালে আমাদের অনুমিত মৎস্য উৎপাদন ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন অর্জিত হবে বলে প্রত্যাশা করছি। যা দেশের বর্তমান মৎস্য চাহিদা ৪০ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টনের কাছাকাছি।

উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগর ও অর্জিত বিশাল জলসীমার সব মৎস্য সম্পদ এখন আমাদের। এ মৎস্য সম্পদ জরিপ ও আহরণের লক্ষ্যে ক্রয় করা হয়েছে ‘আরভি মীন সন্ধানী’ নামের একটি আধুনিক গবেষণা  জরিপ জাহাজ। গভীর সমুদ্র বন্দরে মাছ চাষের অভিজ্ঞতা আমাদের নেই। আমরা এখানে গবেষণা করে মাছ চাষ করতে চাই। তবে ব্যবসায়ীরা সেভাবে এগিয়ে আসছেন না। একটা টেন্ডার ডাকা হয়েছিল সেখানে মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান তাদের টেন্ডার জমা দিয়েছে। ৫ বছরের মধ্যে অর্জিত জলসীমায় যদি আমরা কাজ শুরু করতে না পারি, তাহলে এ সম্পদ হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।