‘নয় ছয় করার কারণেই তো শিক্ষার্থীরা ফেল করেছিল’: ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘নয় ছয় করার কারণেই তো শিক্ষার্থীরা এমন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছিল, তাছাড়া আমার প্রতিষ্ঠানে শূন্য পাশের কোন ইতিহাস নাই, যদি প্রথমেই মোটা অংকের টাকা (ঘুষ) দেওয়া হতো তাহলে আমার কলেজের কোন শিক্ষার্থী ফেল করতো না।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড’র (বাকাশিবো) পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পালকে অভিযুক্ত করে গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে এভাবেই অকপটে বললেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পুরান তাহিরপুর বিএম কারিগরি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেজাউল করিম।

মার্কশীটে পাশ হলেও অনলাইন ফলাফলে ফেল অতপর: ঘুষ বানিজ্য নিয়ে বিভিন্ন গম্যমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর দশ শিক্ষার্থী পাশ করার ঘটনায় তদন্ত কমিটি আসলে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এমনটিই বলেন ওই অধ্যক্ষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরান তাহিরপুর বিএম কারিগরি কলেজে তদন্ত কমিটি আসার খবরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ এলাকাবাসী বুধবার সকালে জড়ো হয়। এ নিয়ে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে খবর পেয়ে গনমাধ্যম কর্মীরাও উপস্থিত হয়। তবে কলেজ প্রতিষ্ঠানের ভাষ্যমতে, তাদের কোন দোষ নেই। দীর্ঘদিন ধরে এমপিও না হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।

উপস্থিত পুরান তাহিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বাবর আলী শেখ, পল্লী চিকিৎসক সোলাইমান আলী, ছাত্র অভিভাবক আব্দুল মালেক, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাহেব আলী ও জেবর আলী শেখসহ অন্যান্যরা বলেন, এই কলেজ প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। সরকারিভাবে প্রদানকৃত কলেজের কম্পিউটার, আলমারিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন আসবাবপত্র কলেজের অফিস সহকারি সাহেব আলী তার ব্যক্তিগত কাজের জন্য বাড়িতে রেখে ব্যবহার করছে। আর কলেজটি কোচিং সেন্টারের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি আসার খবরেই আজ কলেজ কিছুটা পরিষ্কার করা হয়েছে। আর আজকেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ অন্যান্যরা পৃথক প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করায় এ কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকরা বলেন, পেটে ক্ষুদা রেখে আর কতোদিন বিনা বেতনে এই কলেজে সময় দিবো ? আর চুরি হওয়ার অজুহাতে কম্পিউটার, আলমারিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন আসবাবপত্র সাহেব আলীর নিজ বাড়িতে রেখেছেন। তদন্তের বিষয়ে কোন কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত।

এসব বিষয়ে জানতে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি অশোক কুমার বিশ্বাসের সাথে টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে গেলে তার পিএস সাইদুল ইসলাম বলেন, স্যার মিটিং-এ আছে। পরে সংযুক্ত কর্মকর্তা (আইন) ড. রেজা হাসান মাহমুদ বলেন, প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত উচ্চ আদালতে দায়েরকৃত মামলাগুলোই আমরা দেখি। ওই প্রতিষ্ঠান বিষয়ে আমার জানা নেই।

উল্লেখ্য, পুরান তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি’র (বিএম) পাশ-ফেল কেলেঙ্কারির সংবাদ গনমাধ্যমে প্রকাশের পর অপরিশোধিত ঘুষের টাকা ছাড়াই পাশ করে দশ শিক্ষার্থী এমন অভিযোগের বিষয়ে তদন্তে এসেছিল ইউএনও’র প্রতিনিধি দল।

স/অ