নড়াইলে কলেজ অধ্যক্ষকে লাঞ্ছনার ঘটনায় বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের


সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

দেশে ব্যাপক আলোচিত নড়াইলের কলেজ অধ্যক্ষকে লাঞ্ছনার ঘটনায় বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট । ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছনার ঘটনায় ছয় সপ্তাহের মধ্যে নড়াইলের মুখ্য বিচারিক হাকিমকে এ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সোমবার ১৮ জুলাই বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। এর আগে আইন ও সালিশ কেন্দ্রে কলেজ অধ্যক্ষকে লাঞ্ছনার ঘটনায় হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।

বিবাদীদের উপস্থিতিতে আইন হাতে তুলে নেওয়া উন্মত্ত ‘জনতার বিচার’ বন্ধে এবং পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে নড়াইলে মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসসহ অন্যদের লাঞ্ছনা-অপমান থেকে রক্ষা করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন বে-আইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

স্বরাষ্ট্রসচিব, নড়াইলের জেলা প্রশাসক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, নড়াইলের পুলিশ সুপার ও নড়াইল সদর থানার পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আইনজীবী অনীক আর হক। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

আইনজীবী অনীক আর হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আবেদনের আরজি অনুযায়ী আদালত এ ঘটনার বিচারিক অনুসন্ধান করতে নড়াইলের মুখ্য মহানগর হাকিমকে নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেছেন। পাশাপাশি স্বপন কুমার বিশ্বাসকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং তিনিসহ তার পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ’ প্রতিবেদন দাখিলের পর আগামী ১৭ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির তারিখ রখা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৭ জুন সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্র ভারতের বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরদিন কলেজে গেলে কিছু মুসলমান ছাত্র তাকে ওই পোস্ট মুছে ফেলতে বলে।

এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস পুলিশে খবর দেন। এরই মধ্যে ‘অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন’ এমন রটনা ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ ও দুই শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদেরও সংঘর্ষ বাধে।

সে সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কলেজের ছাত্র ও স্থানীয়রা স্বপন কুমারের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। তখন পুলিশ ওই ছাত্রের সঙ্গে অধ্যক্ষকেও থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনার খবর প্রকাশ হলে সেসব খবর যুক্ত করে গত ৪ জুলাই আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে হাইকোর্টে এই রিট আবেদন করা হয়।

সূত্র: কালের কণ্ঠ