নিয়োগ পাবেন ১৫০০ শিক্ষক

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাক্সেস এনহেন্সমেন্ট (সেকায়েপ) প্রকল্পে নিয়োগ দেওয়া হবে ১৫০০ শিক্ষক। দেশের ৫৬১টি মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত ক্লাস শিক্ষক (এসিটি) পদে এসব নিয়োগ দেওয়া হবে। আবেদনের শেষ তারিখ ২১ জুলাই।

সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাক্সেস এনহেন্সমেন্ট (সেকায়েপ) প্রকল্পে অতিরিক্ত ক্লাস শিক্ষক (এসিটি) পদে নিয়োগ দেওয়া হবে ১৫০০ শিক্ষক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং সেকায়েপ প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. মাহমুদ-উল হক জানান, ‘ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে কোনো বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নেই অথবা অপর্যাপ্ত এমন সব বিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করা অতিরিক্ত ক্লাস কর্মসূচির (এসিটি) লক্ষ্য। মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন, মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থায় সবচেয়ে কঠিন বিষয় হিসেবে চিহ্নিত ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়ানোও আমাদের লক্ষ্য। এসিটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন হবে ৬৪টি উপজেলায়। অতিরিক্ত ক্লাস শিক্ষক কর্মসূচির আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ নাগাদ ২০০০টিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। ২০১৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম ধাপে ৪০০টি, ২০১৬ শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয় ধাপে ১০০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম চলছে। ২০১৭ শিক্ষাবর্ষে আরো ৬০০টি যুক্ত হবে।’

আবেদনের যোগ্যতা

সেকায়েপ প্রকল্পের সহকারী পরিচালক ড. মো. আসাদুজ্জামান খান মজলিস জানান, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানের তিনটি (পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান) বিষয়ের প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবে। ইংরেজি বিষয়ে আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে ইংরেজিতে স্নাতক ডিগ্রি। স্নাতক পর্যায়ে ইংরেজিতে কমপক্ষে ৩০০ নম্বর অথবা সমান ক্রেডিট ঘণ্টা থাকতে হবে এবং গড়ে কমপক্ষে শতকরা ৫০ নম্বর থাকতে হবে। তবে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে প্রথম শ্রেণি থাকলে অথবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা অগ্রাধিকার পাবে।

গণিতে আবেদনের জন্য এ বিষয়ে বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে। স্নাতক পর্যায়ে গণিতে ৩০০ নম্বর বা সমান ক্রেডিট ঘণ্টা থাকতে হবে এবং গড়ে কমপক্ষে শতকরা ৫০ নম্বর থাকতে হবে। তবে গণিত বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে প্রথম শ্রেণি পেলে অথবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

বিজ্ঞান বিষয়ের প্রার্থীকে বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। বিএসসিতে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বা জীববিজ্ঞানে ৩০০ নম্বর বা সমান ক্রেডিট ঘণ্টা থাকতে হবে এবং গড়ে কমপক্ষে শতকরা ৫০ নম্বর থাকতে হবে। তবে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন শাস্ত্র বা জীববিজ্ঞানে স্নাতক পর্যায়ে প্রথম শ্রেণি অথবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কোনো বিষয়ে পরীক্ষায় গড়ে ৫০ শতাংশের কম এবং সিজিপিএ ৫-এর স্কেলে ৩ ও ৪-এর স্কেলে ২.৫ থাকলে আবেদন করা যাবে না। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এ পদের জন্য আবেদনের অযোগ্য। বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। যোগ্যতা থাকা যে কেউ বা যেকোনো বয়সের প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবে। অবসরে যাওয়া শিক্ষকরা যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে আবেদন করতে পারবে।

আবেদন প্রক্রিয়া

আবেদন করতে হবে দুই ধাপে। প্রথমে আবেদন করতে হবে অনলাইনে। bit.ly/29xxgxn ওয়েব ঠিকানায় পাওয়া যাবে আবেদন ফরম, অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণের যাবতীয় তথ্য ও বিজ্ঞপ্তি। অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করে সাবমিট করার শেষ তারিখ ২১ জুলাই। দ্বিতীয় ধাপে আবেদনের প্রিন্ট কপি পাঠাতে হবে প্রকল্প পরিচালক, সেকায়েপ, শিক্ষা ভবন, ব্লক-২, তৃতীয় তলা, ১৬ আবদুল গনি রোড, ঢাকা-১০০০ ঠিকানায়।

প্রিন্ট করা আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও নম্বরপত্রের সত্যায়িত কপি, সম্প্রতি তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জাতীয়তা সনদ অথবা জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। খামের ওপর উল্লেখ করতে হবে পদের নাম ও বিষয়ের নাম। প্রিন্ট কপি পাঠানোর শেষ তারিখ ৩০ জুলাই।

প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া

ড. মো. আসাদুজ্জামান খান মজলিস জানান, অনলাইনে এবং প্রেরণ করা প্রিন্ট কপির যাবতীয় তথ্য মিলিয়ে দেখা হবে। আবেদন যাচাইবাছাই করার পর যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করা হবে। পরবর্তী সময়ে মেধার ভিত্তিতে তৈরি করা হবে শর্ট লিস্ট।

প্রার্থীদের কোনো ধরনের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে না। আবেদনকারীকে এসিটিভুক্ত নিজ বা পার্শ্ববর্তী উপজেলার অধিবাসী হতে হবে। উপজেলাসমূহের তালিকা পাওয়া যাবে bit.ly/29xwssB ওয়েবলিংকে।

প্রথমে মেধার ভিত্তিতে নিজ নিজ স্থায়ী উপজেলার প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে তালিকা করা হবে পার্শ্ববর্তী উপজেলার মেধাবী প্রার্থীদের। তৃতীয় ধাপে নির্বাচনে জন্য তালিকা করা হবে জেলার প্রার্থীদের। মেধাক্রম অনুসারে শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাইবাছাই শেষে চূড়ান্ত তালিকা করে প্রতিষ্ঠানপর্যায়ে নিয়োগ করা হবে। নিয়োগের পর দেওয়া হবে ছয় দিনের প্রশিক্ষণ। নারী প্রার্থীদের আবেদনের বিষয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

কর্মস্থল ও পাঠদান

অতিরিক্ত ক্লাস শিক্ষকদের কর্মস্থল হবে নিজ উপজেলায়। শিক্ষকরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় প্রত্যেক শ্রেণি থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ন্যূনতম ২০ জন শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য নির্বাচন করবে। ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের তাদের সমস্যা সমাধানে পরামর্শ দেবে।

প্রতি মাসে একজন অতিরিক্ত ক্লাস শিক্ষককে নিয়মিত ক্লাসের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১৮টি ক্লাস নিতে হবে। এসব অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া যাবে নিয়মিত ক্লাস চলাকালীন বা ছুটির দিনগুলোতে। প্রতিটি ক্লাসের সময় এক ঘণ্টা।

বেতন-ভাতা ও সুবিধা

প্রকল্পের অতিরিক্ত ক্লাস শিক্ষকদের এক বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে। স্নাতক পর্যায়ে প্রথম শ্রেণি বা সমমানের ফলাফল থাকলে মাসিক সম্মানী দেওয়া হবে ২৫০০০ টাকা।

দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের ফলাফল থাকলে মাসিক সম্মানী দেওয়া হবে ২২০০০ টাকা। অগ্রণী ব্যাংকের উপজেলা শাখা থেকে এটিসির নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থেকে সম্মানীর টাকা পাওয়া যাবে। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লে চাকরির মেয়াদ বাড়ারও সুযোগ থাকবে।

সূত্র: কালের কন্ঠ