নিয়মিত কম ঘুমেই বাড়ছে ওজন?

কম ঘুম হচ্ছে? এই নিয়ে সারাদিন মন মেজাজ খিটখিটে কাটছে? যাদের ঘুম কম হয় তাদের অন্যান্য সমস্যার সাথে সাথে ওজন বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গেছে, দিনে ৫ ঘন্টার কম বা ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমলে শরীরে এমন সব পরিবর্তন হয় যে তার জেরে ওজন বাড়ে অনেক সময়।

গবেষণা থেকে জানা গেছে রাতে কম ঘুম হলে হাই ক্যালোরি খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। রাতে ঘুম হয়নি অথচ হাতে প্রচুর কাজ, এ রকম অবস্থায় আমরা কফি বা কোল্ড ড্রিঙ্ক খেয়ে চাঙ্গা থাকার চেষ্টা করি, ফাস্টফুডও বেশি খাই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর মূলে রয়েছে ব্রেনের কিছু কাজ।

ঘুম কম হলে ব্রেনও ভালো কাজ করে না। ঘুম কম হলেই মিষ্টির প্রতি আর্কষণ বাড়ে। ক্লান্ত ব্রেন এমন কিছু চায়, যা তাকে তৃপ্তি দেবে। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ঘুম কম হলে গভীর রাতে  খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে যা কার্বহাইড্রেটে ভরপুর থাকে।

ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর বিজ্ঞানীরা আবার দেখেছেন যে, যারা দৈনিক ৮ ঘণ্টা  ঘুমান, তাদের তুলনায় যারা কম ঘুমান তাদের  খাবারে চর্বির পরিমাণ থাকে প্রায় দ্বিগুণ। মূল কথা, কম ঘুমালে হাই–ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চাহিদা বাড়ে। তার পাশাপাশি সমস্যা তৈরি করে হরমোনও।

কম ঘুমালে ক্ষুধার হরমোন ঘ্রেলিনের পরিমাণ বাড়ে। ক্ষুধা বেড়ে যায়,কমে লেপটিনের পরিমাণ, যার কাজ ব্রেনকে পেট ভরে যাওয়ার সংকেত দেওয়া। ফলে খাওয়া বাড়ে। আবার কম ঘুমের ফলে শারীরিক–মানসিক চাপ বাড়লে ক্ষরিত হয় স্ট্রেস হরমোন কর্টিজোল। ক্যালোরি বার্ন কমে যায়। শিকাগোর বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, টানা ৪ দিন কম ঘুমালেই ইনসুলিনের কার্যকারিতা প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়। ফলে ডায়াবেটিস ও মোটা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। কাজেই ঘুমের সঙ্গে কোনও আপোস নয়।

১.বিছানায় যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে কম্পিউটার,  মোবাইল ও টিভি বন্ধ করুন।

২. পরদিনের কাজের দুশ্চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিয়ে তবে ঘুমাতে যান।

৩.ঘুমনোর ঠিক আগে  বই পড়া, গান শোনা বা মেডিটেশনের মতো কোনও একটা অভ্যাস করতে পারলে ভালো।

৪. ঘুমতে যাওয়া ও সকালে ওঠার সময় মোটামুটি ঠিক রাখুন।

৫.ঘুমানেরা দেড়–দু’ঘণ্টা আগে হালকা খাবার খান। বেশি খেলে ঘুমের সমস্যা হবে।

৬. অন্ধকারে ঘুমের হরমোন মেলাটোনিনের ক্ষরিত হয়। কাজেই আলো নিভিয়ে ঘুমান।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ