রাজশাহীতে নিহত ব্যবসায়ীর লাশ নিয়ে বিক্ষোভ, খুনিদের ফাঁসির দাবি

 

নিজম্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর নিউমার্কেটের ষষ্ঠিতলা এলাকার নিহত ফুটপাত ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলামের (২৩) লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেছে নিহতে পরিবারসহ এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে মহানগরীর নিউ মার্কেট এলাকা থেকে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাজশাহী নগর ভবনের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন এলাকাবাসী। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ চলাকালে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে তারা নিউজ মার্কেটের প্রধান ফটকে নিহতের লাশসহ অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

এদিকে ফুটপাত দখলকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। গত সোমবার (২১ মার্চ) রাতে নিহত রিয়াজুলের বাবা মো. মধু শেখ বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় নাঈম হোসেন নামের একজনকে সোমবার রাতেই ঘটনাস্থলের পাশে থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

হত্যা মামলার আসামিরা হলো- রানা শেখ (৩০), তার ভাই রনি শেখ (২৬), নাঈম হোসেন (২৬), রিমন (২৪), নাইম (৩৫) ও অজ্ঞাত আরও ৭ জন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- গত সোমবার (২১ মার্চ) রাত ৯টার দিকে নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় ফুটপাত দখলতে কেন্দ্র করে রিয়াজুলের দোকানে ঢুকে তাঁকে রড দিয়ে পিটিয়ে ও হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে আসামি রানা শেখ, তার ভাই রনি শেখসহ কয়েকজন। এসময় রিয়াজুলকে বাঁচাতে গেলে তার ভাই রিংকুকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে রিয়াজুল ও রিংকুকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা রিয়াজুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে ব্যবসায়ী রিয়াজুল নিহতের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে এলাকাবাসী জানায়, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে দ্রুত তাদেরকে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানানো হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে অপরাধীরা অপরাধ করেই চলেছে। আসলে তাদের কোনো আদর্শ নেই। তারা আওয়ামী লীগ কিংবা অঙ্গসংগঠনের কেউ না। আমি বিশ্বাস করি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবে।’

বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করে সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক থাকায় তাদেরকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।’

স/আর