নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধন ‘দুরভিসন্ধিমূলক’: মওদুদ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ অভিযোগ করে বলেছেন, নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধন সরকারের ‘দুরভিসন্ধিমূলক ষড়যন্ত্র’।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন।

মওদুদ অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটা তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন। সরকার যা চাইছে তাই করছে। এখন তারা নির্বাচনী আচরণবিধি পরিবর্তন করতে যাচ্ছে। এটা দুরভিসন্ধিমূলক। এই আচরণবিধি পরিবর্তন করা একটা ষড়যন্ত্রের অংশ।

সাবেক এই আইনমন্ত্রী সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, তারা আগামী নির্বাচন পার্লামেন্ট রেখে করতে চায়। আচরণবিধিতে আছে, সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারবেন না। তাই এই আচরণবিধি সংশোধন করা হয়েছে।

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচারে অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়ে আচরণ বিধিমালায় সংশোধনী অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি জানিয়েছে, সংসদ সদস্যরা প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত নন, তাই সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থেকে সংসদ সদস্য শব্দটি বাদ দেয়া হয়েছে। সব সংসদ সদস্য প্রচারে অংশ নিতে পারবেন। তবে কোনো প্রার্থী বা সংসদ সদস্য বা নির্বাচনী এজেন্ট সার্কিট হাউসে থাকতে পারবেন না। সংসদ সদস্যরা নির্বাচনপূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অনুদান অবমুক্ত করতে পারবেন না।

বিএনপি নেতা মওদুদ মনে করেন, আগামী নির্বাচনে সরকারের স্কিম হলো সংসদ থাকবে। সংসদ সদস্য যিনি আছেন, তিনি সংসদ সদস্য থাকবেন এবং সংসদ সদস্য হিসেবে আবার মনোনয়ন পাবেন। তিনিই নতুন প্রার্থী হিসেবে আবার নির্বাচন করবেন। নতুন নির্বাচনে নির্বাচিত সদস্য হিসেবে তিনি শপথ গ্রহণ করবেন। স্থানীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচারে অংশ নেয়ার সুযোগ ছিল না। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সিটি নির্বাচনের জন্য ইসি তাই এতে অগ্রিম সংশোধন এনেছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নির্বাচনে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মওদুদ আহমদ।

খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী মওদুদ আহমদ বলেন, আমি স্বীকার করি যে, একমাত্র আইন-আদালত করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভবপর নয়। তার একমাত্র পথ হলো রাজপথ। কোনো আন্দোলন ছাড়া জনগণের কোনো দাবি আদায় করা সম্ভবপর হয় নাই। যে পথে দাবি আদায় করা যাবে সেই পথ আমাদের বেছে নিতে হবে। রমজান মাসের পরে কঠোর কর্মসূচির পথ আমাদের সেই পথ বেছে নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে মওদুদ বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত গেছেন। আমি আশা করি, তিনি খালি হাতে ফিরবেন না। তিস্তা পানিবণ্টনের স্বাক্ষরিত চুক্তি হাতে নিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসবেন। যদি না আসেন, তাহলে মনে করব যে তার এই ভারত সফর সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

সরকার ব্যর্থ হয়ে দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিনা বিচারে মানুষ হত্যা করছেন বলে অভিযোগ করেন মওদুদ।

জিয়া মুক্তি পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।