বেইলি রোডে আগুন

নিমতলী-চুড়িহাট্টা-বানানীর ঘটনায় কিছু হয়েছে?

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :

সাংবাদিকদের প্রশ্নে পাল্টা প্রশ্ন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নিমতলীতে ১২৪ জন মারা যাওয়ার পরে কি হয়েছে? কিছুই হয়নি। নিমতলীর পর চুড়িহাট্টার ঘটনা ঘটেছে, আবার বানানীতে আগুনে ৪৮ জন মারা যায়। এভাবে একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে। বৃহস্পতিবার বেইলি রোডে ৪৬ জন মারা গেছে। এ মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শুনেছি আমি।

শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেলে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, এতগুলো মানুষ মারা গেছে এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কিছুই হতে পারে না। আমরা বার বার একই ঘটনা দেখতে পাচ্ছি, এরপর কিছুদিন এ ঘটনার উত্তপ্ত থাকে তারপর আবার আগের মতই হয়ে যায়।

তিনি বলেন, আগুন লাগা সাততলা ভবনটিতে একটি মাত্র সিঁড়ি, বের হওয়ার পথ ছিল না। যেই একটি মাত্র সিঁড়ি ছিল সেখানে আবার গ্যাসের সিলিন্ডারে পরিপূর্ণ। এগুলো অত্যন্ত ভয়ংকর ব্যাপার। এরকম একটা অবস্থায় আপনি কীভাবে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা করবেন। এসব ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের অবশ্যই দায় আছে।

বিশেষ করে যেসব বাণিজ্যিক ভবনে এরকম অবস্থা সেখানে ফাস্ট সেফটি নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, গত বছরের ৪ জুন আমরা একটা জাতীয় সেমিনার করি। সেখানে আমরা নিমতলীর ঘটনা, চুড়িহাট্টার ঘটনা, বঙ্গবাজারের ঘটনা, নিউ মার্কেটের ঘটনাসহ বড় বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে পর্যালোচনা করি। সেখানে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করি। কিন্তু সেসব সুপারিশের আজ পর্যন্ত কোনো কাজ হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি এখানে রেস্টুরেন্টে পার্টি হচ্ছিল। কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে ২০ পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট দিয়েছিল যে কারণে মানুষের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। কিন্তু তারা আর জীবন নিয়ে ফিরতে পারলেন না।

আমাদের জাতীয়ভাবে দুর্ভাগ্য আমরা কেউ এ ধরনের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সচেতন হচ্ছি না। আমাদের কর্তৃপক্ষকে এখন বাধ্য করতে হবে ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করতে বলেও জানান তিনি।

উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে অবশ্যই অবহেলা ছিল। এত বড় একটি বাণিজ্যিক ভবন সেখানে অগ্নি নির্বাপক থাকবে না? আর এটা না থাকার কারণে মানুষ পাগলের মত ছুটাছুটি করেও বের হতে পারেনি।

কর্তৃপক্ষের অবহেলা সম্পর্কে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, এখনো দেখেন পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউন সরেনি। কাদের দায়িত্ব এটা সরানোর? ফায়ার সার্ভিস সরানোর জন্য একের পর এক নোটিশ করবে আর এগুলো সরবে না এটা তো হতে পারে না।

এ মৃত্যুকে তিনি হত্যাকাণ্ড বলবেন কি না এমন এক প্রশ্নে তিনি বলেন, এতকিছুর পরেও যদি কর্তৃপক্ষের টনক না নড়ে তাহলে তো আর কিছু বলার নেই। উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে তিনি বলেন, আসলে কি টনক নড়েছে? নিমতলীতে ১২৪ জন মারা যাওয়ার পরে কি হয়েছে? কিছুই হয়নি। নিমতলীর পর চুড়িহাট্টাসহ রাজধানীর কয়েকটি স্থানে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে।

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ রকম ঘটনা ঘটতে থাকা মানে হলো আমরা অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে বসবাস করছি। তাই এ অগ্নিকাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের আলোর দিকে এগিয়ে যেতে হবে।