চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরিষাক্ষেতে পড়ে ছিল আগুনে দগ্ধ ভ্যান চালকের মরদেহ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে পদ্মা নদীর ধারে নিখোঁজ এক ভ্যান চালকের আগুনে দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) রাত থেকে নিখোঁজ থাকার পর জনমানবহীন ফসলী জমি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সরিষা গাছের স্তুপে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয় তাকে।

শুক্রবার (১ মার্চ) সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর নদী রক্ষা বাঁধের পাশে পদ্মা নদীর ধারে থাকা সরিষার জমিতে আগুনের ছাই দেখে এগিয়ে যায় স্থানীয়রা। সেখানে গিয়ে সরিষা গাছের স্তুপে আগুনের ছাইয়ের মধ্যেই আগুনে দগ্ধ মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন তারা। নিহত ভ্যান চালক তোজাম্মেল হক সদর উপজেলার রানিহাটি ইউনিয়নের চকবহরম গ্রামের মৃত ইসমাইল সরদারের ছেলে।

এদিকে খবর পেয়ে ছুটে আসে বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিখোঁজ পাশের গ্রাম চকবহরমপুরের ভ্যান চালক তোফাজ্জল হোসেনের পরিবার। শনাক্ত করে মরদেহ। স্থানীয়দের ধারনা বাঁধের রাস্তায় তাকে একা পেয়ে হত্যা করে ছিনতাই করা হয় ভ্যান। আলামত নষ্ট করতেই তোফাজ্জলকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।

নিহতের ছোট ভাই সামসুল হক ও পরিবারের সদস্যরা বলেন, একটি ভাড়া রয়েছে এমনটা জানিয়ে রাত ৮টার দিকে বাসা থেকে বেয় হয় আমার ভাই। এরপর গভীর রাত হলেও বাসায় না ফিরলে বিভিন্ন স্থানে স্বজনদের কাছে খোঁজখবর নিলেও কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে সকালে নদীর ধারে একটি মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসলে আগুনে দগ্ধ অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, জনমানবহীন ফসলী জমিতে তার মরদেহ পাওয়া গেলেও ভ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। তার দুই হাতে থাকা আংটি ও শরীরের কাপড় দেখে মরদেহ শনাক্ত করেছি। আমাদের ধারনা, পরিকল্পিত হত্যাকান্ড এটি। ঘটনাটি সুষ্ঠ তদন্ত করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানায় তার পরিবার।

এ বিষয়ে রানিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আসাদুজ্জামান ডলার বলেন, রাত থেকে নিখোঁজ হবার পর অনেক খোঁজাখুজি করেও কোন সন্ধান পাওয়া না গেলে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। এর মধ্যেই সরিষা ক্ষেতে মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে তা পুলিশকে জানানো হয়েছে।

তবে প্রাথমিকভাবে হত্যা বলেই ধারনা পুলিশের। শুরু হয়েছে তদন্ত কাজ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) আবুল কালাম সাহিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম, শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) আবুল কালাম সাহিদ বলেন, গতরাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন ভ্যানচালক তোফাজ্জল। বাগানের ভিতর আগুনের ছাইয়ের স্তুপে এক ব্যক্তির মরদেহ দেখতে পেলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।