নাসার ‘কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের যন্ত্র’ আসলে গুজব, তাহলে ওটা কী? (ভিডিও)

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: 

নাসার দানবাকৃতির একটি যন্ত্র সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। বলা হচ্ছে, এটি কৃত্রিম মেঘ সৃষ্টি করে বৃষ্টিপাতের ঘটাতে সক্ষম। ভিডিওতে কৃত্রিম মেঘ সৃষ্টির প্রক্রিয়াও পরিষ্কর দেখা যায়। সেখানে বৃষ্টিও হয়েছে। কিন্তু এই তথ্য যে মিথ্যা তাই সামনে আনলেন নাসার সাবেক আবহাওয়াবিদ মার্শাল শেফার্ড। সেখানে টানা ১২ বছর কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে আর্থ সায়েন্স অ্যাডভাইজরি কমিটিতে আছেন। কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের যন্ত্র হিসেবে ভিডিওটি ভাইরাল হলে তা নজর কাড়ে বিজ্ঞানীর। এই গুজব থেকে বের করে আনতেই তিনি জানিয়েছেন, এটা নাসার যন্ত্র ঠিক আছে। কিন্তু এটা কৃত্রিম উপায়ে মেঘ সৃষ্টি করে বৃষ্টিপাত ঘটানোর যন্ত্র নয়।

তিনি লিখেছেন, সোশাল মিডিয়া আসলে এমন এক জায়গা যেখানে অসংখ্য গুজব সত্য তথ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। আমি খোঁজ নিয়ে দেখি যে নাসার এই পরীক্ষা নিয়ে একেবারে মিথ্য সত্য ভাইরাল হয়ে গেছে। আসলে এ বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি নাসা তার শক্তিশালী আরএস-২৫ ইঞ্জিন পরীক্ষা করে। মিসিসিপির স্টেনিস স্পেস সেন্টারে চলে এই পরীক্ষা। আগামীতে নাসার স্পেস লাঞ্চ সিস্টেম-এ ব্যবহার করা হবে এই নতুন আরএস-২৫ ইঞ্জিন। এর কাজ স্পেস শাটলকে শক্তি জোগানো। মিসিসিপির এই ফ্যাসিলিটি দীর্ঘদিন ধরে নাসার ইঞ্জিন পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

নাসা এক বিবৃতিতে জানায়, আরএস-২৫ এর পরীক্ষা চলছে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে। নাসার নতুন এসএলএস রকেট উড্ডয়নের কাজে এই ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ শক্তিটুকু ব্যবহারের চেষ্টা চলছে। এই পরীক্ষায় ১১৩ শতাংশ থ্রাস্ট লেভেলে পৌঁছানো গেছে। যা কিনা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।

এখন প্রশ্ন হলো, তাহলে ওখানে রীতিমতো মেঘ সৃষ্টি হলো কেন? আবার বৃষ্টিও তো হয়েছে, এটা কীভাবে সম্ভব?

ব্যাখ্যাটা মার্শাল শেফার্ড নিজেই দিলেন। জানালেন, আরএস-২৫ ইঞ্জিন লিকুইড হাইড্রোজেন এবং লিকুইড অক্সিজেন পোড়ায়। কাজেই এই দুই জিনিস এক হলে স্বাভাবিকভাবেই পানি উৎপন্ন হবে। রাসায়নিক বিক্রিয়ার কথাই বলা হচ্ছে। আর এই শক্তিশালী ইঞ্জিন থেকে যে পরিমাণ ধোঁয়া বের হয় তা মেঘ সৃষ্টি করবে তাও স্বাভাবিক। বিপুল পরিমাণ ধোঁয়া যখন আকাশে ছড়াবে তখন হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন এক হয়ে বাষ্প উৎপন্ন করবে। পরে সেই বাষ্প ঘনীভূত হবে এবং পানি হয়ে ঝরবে। তখন এক পশলা বৃষ্টির মতো পানি পড়তে থাকে।

মূলত ইঞ্জিনের ধোঁয়া থেকে মেঘের সৃষ্টি এবং সেখান থেকে পানি ঝরে পড়া দেখে অনেকেই ধরে নিয়েছেন এটা নাসার কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টিপাতের যন্ত্র। নাসা যতবারই তাদের রকেট ইঞ্জিনের পরীক্ষা চালিয়েছে ততবারই এমনটাই ঘটেছে। কাজেই ভবিষ্যতে অন্যান্য ইঞ্জিন পরীক্ষাকালেও একই অবস্থার সৃষ্টি হবে। হয়তো ততবারই ওই ইঞ্জিনকে নাসার কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের যন্ত্র বলেই তথ্য ছড়াবেন গুজব সৃষ্টিকারীরা।

Artificial Cloud for Rain

Machine which makes artificial clouds and rain

Posted by Maverick on Friday, 13 April 2018