নার্সিং পরীক্ষায় রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) পোস্ট বেসিক বিএসসি নার্সিং চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়ন ও মডারেশনে (সমীক্ষণ) ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও বগুড়া নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুর হোসেনের নেতৃত্বে এসব অনিয়ম হয়েছে। আবার একই কলেজের শিক্ষক তার স্ত্রী নাজমা বেগম চারটি এবং সাবেক অধ্যক্ষ হেলাল উদ্দিন পাঁচটি বিষয়ের প্রশ্ন প্রণয়ন ও মডারেশন করেছেন। এতে করে প্রশ্নের মান ও গোপনীয়তা রক্ষা হয়নি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে। নার্সিং বিএসপির প্রশ্ন প্রণয়নসহ নার্সিং পরীক্ষায় অনেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনিয়মের অভিযোগ পেলেও রামেবি কর্তৃপক্ষ রহস্যজনকভাবে নীরব রয়েছেন।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষায় যিনি যে বিষয়ের প্রশ্ন প্রণয়ন করেছেন, তিনিই আবার একই বিষয়ের প্রশ্নের মডারেশন করেছেন। এ ছাড়া একেকজন শিক্ষক পাঁচ থেকে সাতটি বিষয়ের প্রশ্ন প্রণয়ন ও মডারেশন করেছেন। খোদ অধ্যক্ষ মঞ্জুর হোসেনই সাতটি বিষয়ের প্রশ্ন প্রণয়ন এবং মডারেশন করেছেন।

অন্যদিকে বগুড়া নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ নিজ কলেজে কেন্দ্রের প্রধান হলেও দায়িত্ব পালন না করে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে শিক্ষার্থীরা রামেবির ভিসির কাছে টাকার বিনিময়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়া ও নকলে সহায়তা করার অভিযোগ করেছিল। মঞ্জুর হোসেনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে নিয়মবহির্ভূতভাবে কর্মজীবী নার্সদের ভর্তির সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, রামেবির সাবেক উপাচার্য ডিনকে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি করে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য আবারও অধ্যক্ষ মঞ্জুর হোসেনকে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মঞ্জুর হোসেন বলেন, এই বিষয়টি আমি কিছু জানি না। তবে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আমাকে সাত বিষয়ে সেটার-মডেটর করেছেন। তাই আমি কাজ করছি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কেন আমাকে সাত বিষয়ে সেটার-মডেটর করেছেন, সেটি তিনি ভালো জানেন। তবে রামেবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হাবিব অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার করে পরীক্ষা কমিটিকে দায়ী করে বলেন, কমিটি যেভাবে আমাদের বলেন আমরা সেভাবে চিঠি ইস্যু করি। সামনের দিনগুলোতে আর এমনটা হবে না। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কিছু অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ আমরা পেয়েছি যার কারণে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিল করা হয়েছে। সূত্র: যুগান্তর