নাটোরে পৃথক তিন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৫,আহত ৪৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাটোরের বড়াইগ্রাম ও লালপুর উপজেলার সীামন্তবর্তী কদিমচিলান এলাকায় বাস-লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে এক পরিবারের তিনজনসহ ১৪ জন নিহত ও প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। বনপাড়া-হাটি কুমরুল মহাসড়কে অপর এক দুর্ঘটনায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাসের চালক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ১০ জন। অন্যদিকে লালপুরের তিনখুটি নামক স্থানে সিএনজির চাকা বের হয়ে আহত হয়েছে আরও চারজন। আজ শনিবার দুপুরে ও বিকেলে তিনটি পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।

নাটোরের লালপুর ও বড়াইগ্রাম ঘুরে এসে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

বড়াইগ্রাম ঘুরে এসে সিল্কসিটি নিউজের বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি মঞ্জুরুল আলম মাসুম জানিয়েছেন, বড়াইগ্রামের বাস ও লেগুনার সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ১৪ জন নিহত হয়েছেন। জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দেয়ার কথা বলেছেন। সেই সাথে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রাজ্জাকুল ইসলাম দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. সাইদুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার এবং আহতদের জন্য ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন-লেগুনার যাত্রী পাবনা জেলার ঈশ্বর্দী উপজেলার মুলাডুলি শ্মসানপাড়ার মিন্টু রোজারিও’র স্ত্রী আদরী বিশ্বাস (৩৫), তার ছেলে প্রত্যয় বিশ্বাস (১২) ও ১০ মাস বয়সী শিশু মেয়ে স্বপ্না বিশ্বাস, লেগুনার চালক নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের আব্দুর রহিম (২৮), বড়াই গ্রামের নারায়ণপুর গ্রামের আবু তাহেরের স্ত্রী রজুফা খাতুন (৫০), রুপচাঁদের স্ত্রী শেফালী খাতুন(৩৫), জামাইদিঘা গ্রামের নুরফেল সরদারের স্ত্রী লগেনা বেগম (৫০), টাঙ্গাইলের গোপালপুরের বাসিন্দা আর আর পি ফিড কোম্পানীর কর্মকর্তা রোকন উদ্দিন (৫৫), পাবনা জেলার ঈশ্বর্দী উপজেলার দাশুড়িয়া মীরকামারী এলাকার সালামত উল্লাহর স্ত্রী শাপলা খাতুন (২১) ও ঈশ্বর্দী এলাকার আব্দুস সোবহান (৭৫)। অপর নিহতদের এখন পর্যন্ত পরিচয় পাওয়া যায়নি।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি জিএম শামসনুর জানান, শনিবার বিকেল পৌনে ৪ টায় কদিম চিলান সাদিয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে পাবনা থেকে বগুড়া গামী চ্যালেঞ্জার পরিবহনের একটি বাসের(ঢাকা মেট্রো চ ৫৬৫৯) সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী লেগুনা স্মরণ এন্টারপ্রাইজের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ১০ জনসহ মোট ১৪ জন নিহত ও আরো প্রায় ২৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে ৫ জন মহিলা, দুজন শিশু ও বাকিরা পুরুষ।

আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নাটোর সদর হাসপাতাল, বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতাল ও বনপাড়া আমিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনাস্থলে রাস্তা ভাঙ্গা থাকায় লেগুনার চালক ভাঙ্গা এড়াতে রং সাইডে গাড়ি ঢুকিয়ে দেয়। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা বেপরোয়া গতির বাসটি নিয়ন্ত্রণ রাখতেনা পেরে লেগুনার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।

অপরদিকে বনপাড়া-হাটি কুমরুল মহাসড়কে অপর এক দুর্ঘটনায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাসের চালক বাবু (৪০) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায় নি। এ ঘটনায় এক শিশুসহ আরো প্রায় ১০জন গুরুতর আহত হয়েছেন।

আমাদের লালপুর প্রতিনিধি আলাউদ্দিন জালাল জানিয়েছেন, বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে লালপুরের তিনখুটি নামক স্থানে সিএনজির চাকা বের হয়ে চার জন আহত হয়েছেন। আহতদের সবাইকে লালপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন, সাইফুল (৩২), খাইরুল (২৭), সাইদ (২৬) ও আবুল কালাম আজাদ (২৮)।

স/শ