নাটোরে ছাত্রলীগের জঙ্গি বিরোধী সমাবেশ: বিদ্যালয় ছুটি ঘোষনা

নিজস্ব প্রতিবেদক,নাটোর:
বিদ্যালয়ের মাঠে ছাত্রলীগের জঙ্গী বিরোধে সমাবেশ, তাই ক্লাশ স্থগিত ঘোষনা করে বিদ্যালয় ছুটি দিয়েছে নাটোরের শের-ই বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়। অপরদিকে, সমাবেশ স্থলে উচ্চ শব্দ করে মাইক বাজলেও তার মধ্যে ক্লাশ চলে বড়হরিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এতে ক্লাশ করতে সমস্যা হয় শিক্ষার্থীদের।

 
দলটি সূত্র জানায়, শনিবার বিকেল ৪টায় শহরের বড়হরিশপুর শের-ই বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জঙ্গী বিরোধি সমাবেশের আয়োজনে করে নাটোর জেলা ছাত্রলীগ। এতে প্রধান অতিথি অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে, স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন সহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একই বাউন্ডারির মধ্যে শের-ই বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় ও বড়হরিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। সকাল থেকে সমাবেশের মাইকের আওয়াজের মধ্যে স্কুলের ক্লাশ নেয় শিক্ষকরা। কিন্তু শব্দের কারনে কিছুই বুঝতে পারনে না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফলে শের-ই বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় টিফিনের সময় ক্লাশ স্থগিত করে ছুটি ঘোষনা করে। অপরদিকে, সমাবেশ স্থলে উচ্চ শব্দ করে মাইক বাজলেও তার মধ্যে ক্লাশ চলছে বড়হরিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এতে ক্লাশ করতে সমস্যা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

 
সূত্র জানায়, শের-ই বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি অপূর্ব চক্রবর্তী আর বড়হরিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুম। যার কারনে স্কুল মাঠে সমাবেশের আয়োজন কেউ বাধা দিতে সাহস পায়নি। তাছাড়া বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ করতে হলে লিখিত আবেদন করে ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয়, অথচ ক্ষমতার অপব্যবহারে কিছুই করেনি তারা।
এরআগে গত কয়েক দিন ধরেই সমাবেশ উপলক্ষে প্যান্ডেল তৈরীর কাজ চলে, সে সময় থেকেই অভিভাবক এবং শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়।


অভিভাবকরা বলেন, নাটোর শহরে সমাবেশ করার জন্য বড় বড় জায়গা থাকলেও স্কুলের মাঠ দখল করে সমাবেশ করা হচ্ছে। তাছাড়া রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাহত হবে।

 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, সমাবেশের কারনে আসলেই শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি আগে কেউ এইভাবে ভাবেনি।

 
ছুটির বিষয়ে শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, বিশেষ কারনে পাঁচটা ক্লাশ নিয়ে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এত হৈচৈ এর কারনে ক্লাশ করা সম্ভব নয়।

 
তিনি বলেন, বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশের বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। তাছাড়া বড়হরিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুম, তাদের বিদ্যালয়ের সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা অপূর্ব চক্রবর্তীর কাছে মৌখিক ভাবে অনুমতি নিয়েছেন। কারন সভাপতি অনুমতি দিলে আমার কিছুই করার নাই।

 
বড়হরিশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাহবুবা লায়লা কাদেরী সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, যেহেতু বড় রাজনৈতিক দলের সমাবেশ সেহেতু আমদের বলার কিছুই নেই। উচ্চস্বরে মাইক বাজলেও আমরা ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি, তাছাড়া সমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকেই বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার কম।

 
তিনি আরো বলেন, সমাবেশে বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও জানে। আর অনুষ্ঠানস্থলে এমপি সাহেব আসলে তার মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

 
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুম বলেন, সমাবেশ উপলক্ষে কোন স্কুল ছুটি নাই। দুটি স্কুলই চলছে।

 
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, বিদ্যালয় মাঠে এভাবে সমাবেশ করতে হলে ম্যানেজিং কমিটির লিভিক অনুমতি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। তবে সমাবেশে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
স/শ