নরসিংদীতে প্রবাসীর জমি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

নরসিংদীর রায়পুরায় নিলক্ষা ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক প্রবাসীর জমি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, জমির মালিক বিরাজ শিকদার ইতালি থাকেন। তার অবর্তমানে জাল স্বাক্ষর ও ভুয়া বিক্রেতা সাজিয়ে জমি ক্রয় করে নিয়েছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান।

আর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জাল দলিলটি রেজিস্ট্রি করেছেন রায়পুরা সাব-রেজিস্টার। বিষয়টি গ্রামবাসীর নজরে এলে এলাকায় নিন্দার ঝড় ওঠে।

সম্প্রতি নরসিংদী রায়পুরার নিলক্ষা ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য জমি ক্রয়ে এ দুর্নীতি করা হয় বলে জানা গেছে।

গ্রামবাসী ও একাধিক ইউপি সদস্যেরে অভিযোগ, চেয়ারম্যান নিজ স্বার্থে দাঙ্গাপ্রবণ একটি এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের জন্য জমি ক্রয় করেন। এতে করে সেবাবঞ্চিত হবে নিলক্ষার মানুষ।

জানা গেছে, রায়পুরার নিলক্ষা গ্রামে আতশ আলী বাজারে অবস্থিত বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ। সম্প্রতি নতুন করে নিলক্ষায় আধুনিক ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। সেই লক্ষ্যে পাশের গ্রাম হরিপুরে ১২ জনের কাছ থেকে ২৫ শতাংশ জমি দানপত্র দলিল মূলে ক্রয় করেন নিলক্ষা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম।

গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখে রায়পুরা সাব-রেজিস্ট্রার মো. হালিমুজ্জামান দলিলটি রেজিস্ট্রি করেন। দলিলে ১২ জন বিক্রেতার ছবি ও স্বাক্ষর নেয়া হয়।

দলিলে বিক্রেতাদের তালিকায় নিলক্ষা গ্রামের বিরাজ সিকদার ৪.৫০ শতাংশ জমি ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের নিকট বিক্রি করেছেন বলে দলিলে লেখা হয়। দলিলে ইতালি প্রবাসী বিরাজ শিকদারের ছবিও সাঁটানো হয়। শুধু তাই নয়, দলিলে দেয়া হয় বিরাজ শিকদারের জাল স্বাক্ষর।

কিন্তু গত সাড়ে পাঁচ বছর ধরে নিলক্ষার সালাম শিকদারের ছেলে বিরাজ শিকদার ইতালিতে অবস্থান করছেন।

বিরাজের স্ত্রী পপি আক্তার  বলেন, আমার স্বামী সাড়ে পাঁচ বছর ধরে ইতালিতে আছেন। জমি বিক্রয়ের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাড়ে পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি দেশে আসেনি। তবে জমি বিক্রি করবেন কীভাবে?

নিলক্ষা ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিদ্দিক মিয়া বলেন, বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদটি বাজার কেন্দ্রীয় ও গ্রামের মাঝামাঝি অবস্থায় আছে। কিন্তু চেয়ারম্যান নিজ স্বার্থে পরিষদটি গ্রামের এক কোনায় নদীর পাড়ে নিয়ে যেতে চান। তা ছাড়া এলাকাটি দাঙ্গাপ্রবণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে যায় না, তা হলে গ্রামের মানুষ সেবা পাবে কীভাবে। তিনি আরও বলেন, মাসিক সভার রেজুলেশনের কথা বলে চেয়ারম্যান আমাদের কাছ থেকে খালি খাতায় স্বাক্ষর নেন। স্বাক্ষর নিয়ে খালি খাতায় ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণের রেজুলেশন করেন। কিন্তু এর জন্য আমরা স্বাক্ষর দিইনি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নিলক্ষা ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম  বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের জন্য তারা জমি দান করেছেন। জমি কেনা হয়নি। তবে দলিলে মূল্য দেখাতে হয় তাই বিক্রয়মূল্য দেখানো হয়েছে।

ইতালি প্রবাসী বিরাজ শিকদারের জমির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিরাজ বিদেশে থাকে। জমি রেজিস্ট্রি করে সে বিদেশে গেছে।