নওগাঁয় শহীদ সুরত আলী দারোগার শাহাদাতবার্ষিকী পালন

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ: মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ সুরত আলী দারোগার ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে তাঁর জন্মস্থান নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ডাসনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শহীদ সুরত আলী দারোগা স্মৃতি পরিষদ ও নওগাঁর সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁর পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন।
শহীদ সুরত আলীর ছেলে ডা. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পত্নীতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গাফফার, একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি ডিএম আব্দুল বারী, কবি ও গবেষক আতাউল হক সিদ্দিকী, শহীদ সুরত আলীর নাতনি ডা. সোহেলী রহমান মলি, মুক্তিযোদ্ধা আলতাফুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সুরত আলী দারোগার সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন একুশে পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বিষ্ণু কুমার দেবনাথ।
শহীদ সুরত আলী ১৮৯৩ সালে পত্নীতলা উপজেলার ডাসনগর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
রাজশাহী কলেজ থেকে বিএ পাশ করার পর ১৯১২ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনামলে পুলিশে যোগ দেন।
চাকরি জীবনে রাজশাহী জেলার বিভিন্ন থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে চাকরি করেন। এজন্য তিনি এলাকায় সুরত আলী দারোগা হিসেবে পরিচিত।
১৯৫০ সালে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সহচর হিসেবে ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে নওগাঁর নর্থ আসন থেকে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি এমএলএ নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে মুুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেন তিনি। সে সময় তিনি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। বিভিন্ন সময় তাঁর বাড়িতে মুুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন।
অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো থাকায় ভারতের বালুরঘাট মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের রসদ সরবরাহ করতেন তিনি। এসব খবরগ জেনে যাওয়ায় একাত্তরের ১৫ আগস্ট সুরত আলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁকে ধরে নিয়ে যায় পাক সেনারা। মহাদেবপুর পাক সেনা ক্যাম্পে আটকে রেখে তাঁর ওপর নির্মম নির্যাতন চালায় পাক সেনারা। ২২ আগস্ট তাঁকে হত্যা করে তাঁর লাশ আত্রাই নদে ভাসিয়ে দেয়। পরে তাঁর লাশের কোনো সন্ধান পাননি স্বজনেরা।
স/শা