নওগাঁয় ব্লাইন্ড চেক সংগ্রহকারী চক্র সক্রিয়: হয়রানীর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ :
নওগাঁয় ব্লাইন্ড চেক সংগ্রহকারী চক্র এখন সক্রিয়। চড়া সুদে টাকার বিনিময়েই হোক, আর চুরি করেই হোক স্বাক্ষর করা কোন ফাঁকা  চেক হাতে পেলেই হলো। পরবর্তীতে ওই চেকে খুশিমত টাকার অংক বসিয়ে সাধারন মানুষকে চরমভাবে হয়রানী করা হচ্ছে। শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করা, দেনদরবার করে মোটা অংকের টাকা আদায় ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে চেক ডিজ-অনার মামলা চাপিয়ে দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়া হচ্ছে। তাদের খপ্পড়ে পড়ে অনেক নীরিহ পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে, আবার কেউ কেউ দেশান্তরী হয়েছে। ঠিক এমনই এক চক্রের পাল্লায় পড়ে চেক ডিজঅনার মামলার আসামী হয়েছে, শহরের লস্করপুর মহল্লার দিলীপ চন্দ্র সরকার নামে এক দরিদ্র টমটম চালক। এমন ঘটনা শহরে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।

 
অভিযোগে জানা গেছে, শহরের লস্করপুর মহল্লার মৃত গৌর চন্দ্র সরকারের পুত্র দিলীপ চন্দ্র সরকারের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, নওগাঁ শাখার হিসাব নং-০২৭২১০১০০০০০৪৮১১ চেক বইয়ের স্বাক্ষর করা দু’টি পাতা-সিডি নং-১০৩৩৩৩৭ এবং সিডি নং-১০৩৩৩৩৮ বাড়ি থেকে শহরে যাবার পথে হারিয়ে যায়। এ ব্যাপারে দিলীপ কুমার ২৭-১১-১৬ তারিখে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন। যার নং-১৩৫২। তিনি জিডির কপিসহ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় অবগত করলেও ব্যাংকের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা বিষয়টি আমলে নেয়নি। বরং অবগত করার পরেও গত  ৮-১২-১৬ তারিখে চেক ডিজঅনার করে দেয় ব্যাংক।

 
এদিকে শহরের পার-নওগাঁ সরদারপাড়ার জনৈক মনিরুজ্জামান তাপস গত ১ ফেব্রুয়ারি নওগাঁ ৩ নং আমলী আদালতে ১৮৮১ সালের নেগোসিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট এ্যাক্টের ১৩৮ ধারা মোতাবেক একটি মামলা করেছেন। আদালত আগামী ৫ জুন হাজিরার দিন ধার্য করেছেন। দিলীপের হারানো স্বাক্ষর করা দু’টি চেকের একটিতে ৮লাখ টাকার অংক বসিয়ে ব্যাংক থেকে ডিজঅনার করিয়ে নেয়া হয়। মামলার আরজীতে বাদি মনিরুজ্জামান তাপস দাবী করেন, ওই ফাঁকা চেক জমা দিয়ে তার কাছ থেকে ৮লাখ টাকা ধার নেয়া হয়েছে।

 
অপরদিকে ভুক্তভোগী দিলীপ জানায়, উক্ত মনিরুজ্জামান তাপসের সঙ্গে তার কোন পরিচয় নেই বা আগে কখনো ছিলনা। তার কাছ থেকে সে কখনো কোন টাকা নেয়নি। তা ছাড়া আমি গরীব মানুষ। এক সঙ্গে এতো টাকা নেয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।

 
তিনি আরো জানায়, কিছুদিন আগে ওই এলাকার তাপস, দুলাল, পল্লবসহ কয়েকজন তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে টাকার দাবী করে এবং সন্ত্রাসী কায়দায় বেদম মারপিট করে। এমন কি তারা তাকে হত্যার হুমকিও অব্যাহত রেখেছে। তার ধারনা এই ব্লাইন্ড চেক সংগ্রহকারী চক্র তার হারানো চেক পেয়ে অথবা চুরি করে এভাবে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। বর্তমানে দিলীপ পরিবার পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

স/শ