নওগাঁয় ‘প্রভাবশালীদের দখলে’ আদিবাসীদের দু’টি শ্মশান পুকুর

সাপাহার প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নির্মইল ইউনিয়নের হ্টাশাওলী জামডাংগা রুইমারী গ্রামে বসবাসরত আদিবাসী ও হিন্দু সংখ্যালঘুু সম্প্রদায়ের শ্মশান হিসেবে ব্যবহৃত সরকারী খাসপুুকুরগুলো প্রভাবশালীদের দখলে থাকার অভিযোগ উঠেছে। তা উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন আদিবাসীরা।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ২ নম্বর নির্মইল ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক অনিল এক্কা জানান, হাটশাওলী মৌজার ১২১৫ দাগের আমলাহার পুকুর ও ৮২১ দাগে অবস্থিত মোশান পুুকুর নামের দুইটি পুকুরে বহু পূর্বকাল হতে এলাকার আদিবাসী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন শ্মশান হিসেবে সেখানে তাদের মৃতদেহ সবদাহ করতেন। তৎকালীন জামায়াত বিএনপি সরকার আমল থেকে স্থানীয় একটি প্রভাবশলী মহল ওই পুুকুরগুলো অবৈধভাবে জবর দখলে নিয়ে মাছ চাষিদের নিকট লিজ দিয়ে অবৈধ অর্থ উপার্জন করছে। এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রবীণ ব্যক্তি দেওয়ান বেশরা, মাঝি বেশরা, সমরু উরাও ,কাইনচা উরাওসহ অনেকে অভিযোগ করেন, লোকজন মারা গেলে মৃতদেহ সৎকার করতে চরম ভোগান্তি হয়। এলাকায় নদী নালা না থাকায় দূর দূরান্তের খাড়িতে নিয়ে সবদাহ করতে হয়। তাদের এ সমস্যা সমাধান ও প্রভাবশলী দখলদারদের হাত থেকে শ্বশান পুকুর দুটি উদ্ধারের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আদিবাসী সংখ্যালঘুদের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়।

পত্নীতলা উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে বাংলা ১৪২৬ সনের খাস আদায়ের নিমিত্তে আমলাহার শ্মশানের পক্ষে সভাপতি নুকু এক্কা ও মোশানপুুকুর শ্মশানের পক্ষে সভাপতি অনিল এক্কার নামে লীজ প্রদান করেছে। লীজ গ্রহণকারী স্থানীয় আদিবাসী সংখ্যালঘুু সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের বেদখল হওয়া শ্মশান পুুকুর দুটি পুন:উদ্বারের জন্য গেলে অবৈধ দখলদার ওই প্রভাবশালীরা তাদের বাঁধা প্রদান করে। এ ঘটনার পর থেকে স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠি ও প্রভাবশালী দখলদারদের মাঝে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সরকারী নীতমালা অনুযায়ী লীজ গ্রহণ করেই এলাকার অসহায় আদিবাসী জনগোষ্ঠি তাদের পুর্ব পুুরুষের একমাত্র শ্মশান পুকুর দুইটি প্রভাবশালীদের হাত থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে।

অপরদিকে ওই পুকুরগুলোর বর্তমান মাছচাষী পার্শ্ববর্তী পাড়াশাওলী গ্রামের আমিনুল হকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, হাটশাওলী দিঘিপাড়ার মুুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলী, তমিজ উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন তার নিকট থেকে বাৎসরিক চুক্তিতে টাকা নিয়ে মাছ চাষের জন্য পুকুর ইজারা দিয়েছে।

এ বিষয়ে হাটশাওলী দিঘিপাড়ার বাসিন্দা মুুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলী ও তমিজ উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা আদিবাসী সংখ্যালঘুুদের শ্মশান পুকুর দখলে রাখার বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারলেও যুগযুগ ধরে এভাবেই তা ভোগদখল করছেন বলে জানান।

ভুক্তভোগী অসহায় আদিবাসী সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের বেদখল হওয়া শ্মশান পুকুরগুলো অবৈধ দখলদারমুক্ত করে সেখানে মৃত দেহ সবদাহ ও সৎকারের সুু-ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

 

স/শা