ধামইরহাট হাসপাতালে যুবলীগ নেতার মৃত্যু, দোষীদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ :
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থানা যুবলীগের সহ-সভাপতি রবিউল ইসলামের চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবীতে এক মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। রবিবার উপজেলা ক্যান্টিন চত্বরে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে  ধামইরহাট সচেতন যুবসমাজ।
জানা গেছে,ধামইরহাট থানা আওয়ামী যুবলীগের সহসভাপতি ও থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম (৪৫) গত ১০ আগষ্ট রাত দেড়টার দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করে তার অসহায় মা মাজেদা বেগমকে সাথে নিয়ে রাতে সে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে আসে। জরুরী বিভাগের কলাপসিবল গেট বন্ধ ও চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলে ঘুমিয়ে থাকায় ডাক্তার দেখার আগে সে মারা যায়। পরবর্তীতে তার লাশ জরুরী বিভাগের সামনে মাটিতে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনগনের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
 রবিউল ইসলাম ধামইরহাট পৌরসভার অন্তর্গত চকময়রাম গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিন মাস্টারের ছেলে।
ওই দিনের ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবীতে রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ধামইরহাট-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলা ক্যান্টিন চত্ত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্টিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন, থানা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম,চকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম খেলাল-ই-রব্বানী,নিহত রবিউল ইসলামে মা মাজেদা বেগম,থানা যুবলীগের সভাপতি জাবিদ হোসেন মৃদু,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এড.আইয়ুব হোসেন,সমাজসেবক লুৎফর রহমান,রফিকুল ইসলাম,যুবনেতা আব্দুল হাই দুলাল,আবু ইউসুফ মুর্তজা রহমান,মেহেদী হাসান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা-ওই দিনের ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি প্রদান,হাসপাতালে ডাক্তার ও স্টাফদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, যৌক্তিক কারণ ছাড়া রোগিকে অন্যত্র রেফার্ড না করা,নিম্নমানের খাবার পরিবেশ বন্ধ করা এ্যাম্বুলেন্সের নেশাখোর চালককে ৭২ ঘন্টার মধ্যে প্রত্যাহারের দাবী জানান।
এছাড়া প্রায় ২০/২৫ বছর ধরে যেসব নার্স ও অন্যান স্টাফ হাসপাতালে রয়েছে তাদেরকে প্রত্যাহার করতে হবে। হাসপাতারের ঔষধ ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণে তদারকি কমিটি এবং হাসপাতালে ঔষধ কোম্পানীর রিপ্রেজেনটিভদের দৌরাত্ম বন্ধ করতে হবে। এসব দাবী মানা না হলে দূর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মো.আসাদুজ্জামান বলেন,ওই দিনের ঘটনা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক ও অনাকাঙ্খিত।
জেলা সিভিল সার্জন ডা.মো.মুমিনুল হক বিষয়টি তদন্তের জন্য ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা.মনজুর-এ মুর্শেদকে আহবায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
কমিটি সদস্যরা হলেন সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মো.আবুল কালাম আজাদ ও পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও প্যাথলজিষ্ট ডা.মো.খালিদ সাইফুল্লাহ।
আগামীকাল সোমবার থেকে তদন্ত শুরু করে ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে রির্পোট প্রদান করবেন। তিনি আরও বলেন,তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।