দ্বিতীয় দিনেও বাস বন্ধে রাজশাহীতে দুর্ভোগ চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক:


জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজশাহীতেও ধর্মঘট পালন করেছে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা। হঠাৎ পরিবহণ বন্ধের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। এমন অবস্থায় ছোট বাহনে অতিরিক্ত ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে যাত্রীদের। যাত্রীদের অভিযোগ- টিকিটের টাকা ফেরৎ পেতে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে তাদের। শুধু তাই নয়- অনেকে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা দিতে বের হয়ে পড়েছেন যানবাহন সঙ্কটে। তবে রাজশাহী বাস টার্মিনাল থেকে কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি।

শুক্রবার (৫ নভেম্বর) পরিবহন বন্ধের প্রথম দিন ছিল। আজ শনিবার ( ৬নভেম্বর) দ্বিতীয় দিন। এদিন সকালে অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেরিয়ে রাস্তায় দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন যানবাহন না পেয়ে। কেউ কেউ বাড়ি ফিরে গেলেও অনেকে গাড়ি না পেয়ে বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যে রওনা করেন। এতে করে গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। তবে সড়কে আটোরিক্সা ও সিএনজি বেশি ভাড়ায় যাত্রী পরিবহনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, রাজশাহী থেকে নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁয় অনেকেই আটোরিক্সা ও সিএনজি যোগে রওনা হয়েছেন। তবে দূরের রাস্তা হওয়ায় বেশির ভাগ মানুষ সিএনজি ভাড়া করে গন্তব্যে উদ্দেশ্যে ছুটেছেন। এতে করে গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া।
রাকিবুল ইসলাম নামের একযাত্রী জানান, ‘রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাসের ভাড়া ৭০ টাকা। কিন্তু অটোরিক্সায় নেওয়া হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। বাস না থাকায় বেশি ভাড়া নিচ্ছেন অটোরিক্সা চালকরা।’

অন্যদিকে, অনেক যাত্রী ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাজশাহীর বাস টার্মিনালে এসেছিলেন। তারা বাস না পেয়ে বিকল্প হিসেবে ট্রেনের টিকিটের জন্য ছুটি যান। সেখানেও ছিলনা টিকিট। অনেকেই স্ট্যান্ডিং টিকিট পেলেও কেউ বা ফিরেছেন খালি হাতে। তবে কর্মজীবী মানুষগুলো সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। কর্ম বাঁচাতে (টিকিয়ে রাখতে) বেশি ভাড়া দিয়ে হলেও বিকল্প উপায়ে ছুটতে হয়েছে গন্তেব্যে।

রাজশাহী বাস টার্মিনালে যাত্রী হযরত আলী জানান, ‘চাকরি করি পাবনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে। আমিসহ ৫ জনের অগ্রিম টিকিট কেনেছিলাম বেশ কয়েকদিন আগে। আজ টার্মিনালে এসে দেখি বাস বন্ধ। তাই ফিরে যেতে হবে বাড়িতে।’ তিনি আরো জানান- ‘টিকিট ফেরতের জন্য কাউন্টারে যোগাযোগ করি। এতে শুরু হয়- তালবাহানা। কাউন্টারের কর্মীরা মুঠোফোন জানায়- যখন বাস ছাড়ার কথা ছিল। তখন আসলে টিকিটের টাকা ফেরৎ দিতেন তারা। বাস ছাড়ার সময় ছিল সকাল ৬টায়। কিন্তু আগেই শুনেছি বাস বন্ধ। তাই আর সকালে আসিনি; এসেছি সকাল ১০ টায়। অনেক কথার পরে তারা টিকিটের টাকা ফেরৎ দিনে চাইলো।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-মহানন্দা কাউন্টারের মাস্টার তাহাব আলী জানান, ‘যারা টিকিট কিনেছেন; বাস বন্ধ থাকার কারণে যাত্রা করতে পারেনি। তাদের টাকা ফেরৎ দেওয়া হচ্ছে।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।
রজনীগন্ধা পরিবহনের কাউন্টার থেকে আসাদ শেখ জানান, অগ্রিম যাদের টিকিট কাটা ছিল; তাদের টাকা ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও বলা যাচ্ছে না কখন থেকে বাস চলাচল করবে।

রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, সরকার বা কেন্দ্রীয় ভালো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তেলের দাম বাড়ায় যাত্রী পরিবহনে লোকসান হবে। তেলের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে বাস চালানো মুশকিল। আগের ভাড়ায় বাস চালানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

স/আ