দৈনিক তিস্তা পত্রিকাকে ৮ম ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন ভাতা পরিশোধের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দিনাজপুর হতে প্রকাশিত দৈনিক তিস্তা পত্রিকার বিরুদ্ধে ৮ম ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন ভাতা পরিশোধের রায় প্রদান করেছে রাজশাহী বিভাগীয় শ্রম আদালত। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এই চুড়ান্ত রায় প্রকাশ করেন রাজশাহী বিভাগীয় শ্রম আদালতের বিচারক(জেলা ও দায়রা জজ) নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর/১৯ এক জনাকীর্ন পরিবেশে রায় প্রদান করলেও তা চুড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয় নি।

রায়ে বলা হয়, দৈনিক তিস্তার মিজানুর রহমান লুলু দীর্ঘ ১৭বছর ধরে উক্ত পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মাহবুব আলম শুভকে বেতন ভাতা না দেওয়ার সধ্যদিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। যেহেতু এই মামলার আরজিতে দরখাস্তকারীর পাওনার কোন সুনিদিষ্ঠ দাবী করেন নি তাই আদালত ৮ম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী তার বেতন ভাতা পরিশোধের রায় প্রদান করেছেন। এই বেতন ভাতার পরিমান কত টাকা হবে তা হিসাব নিকাশ করে জানা যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। আদালত এই রায়ের সাথে মাহবুব আলমকে স্বপদে বহাল এবং দায়িত্ব পালনে কোন প্রকার বাধা বিঘœ সৃষ্টি না করতে বিবাদীগণকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

এখানে উল্লেখ্য যে, গত১০/০৪/২০১৭ দৈনিক তিস্তার বার্তা সম্পাদক ও ঢাকা ব্যুরো চিফ মাহবুব আলম মোকাদ্দমা দায়ের করেন যে,দীর্ঘ ১৭বছর ধরে তাকে বেতন ভাতা দেয়া হচ্ছে না এবং ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী কোন বেতন ভাতা পান না তিনি। গত কয়েক বছর ধরে বেতন ভাতা ও সরকার ঘোষিত ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী সুবিধা পাওয়ার জন্য পত্রিকার মালিক পক্ষের কাছে আবেদন করলেও কোন সুরহা না করে কোন নোটিশ ছাড়াই তাকে পত্রিকা থেকে বের করা হয় এবং সরকারী সাংবাদিকতার এক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের আবেদন করেন মালিক পক্ষ। পাওনা বেতন ভাতার জন্য তিনি দিনাজপুরের ডিসি,এসপি,সিনিয়র তথ্য অফিসার,বিএফইউজের কেন্দ্রীয় কার্যালয়,দিনাজপুর প্রেসক্লাব,সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ স্থানে আবেদন করলেও বেতন ভাতা না পাওয়া এবং সরকার ঘোষীত ৮ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ীত না হওয়াই মামলা করতে তিনি বাধ্য হন। যার মামলা নং১০/২০১৭ তাং ১০/০৪/২০১৭। মাহবুব আলম পেশাগত জীবনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হিসেবে ২০১৪ সালে নেপালে ৭দিন ব্যাপি ১৮তম সার্ক সম্মেলনে অংশ গ্রহন করেন।

এ ছাড়াও একই বছরে গঙ্গার তিস্তার পানি চুক্তির সংবাদ সংগ্রহের জন্য নয়া দিল্লী ও কোলকাতায় ৯দিন অবস্থান,২০০৬সালে শ্রীলঙ্কায় সাংবাদিক হিসেবে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশগ্রহন করা ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন সংবাদ সংগ্রহে দেশ বিদেশে ভ্রমন করেছেন দৈনিক তিস্তার পক্ষ থেকে। মামলাটি ২বছর ৫মাস ধরে মোট ২১টি ধার্য্য তারিখে নিস্পত্তি হলো।

মামলার বিবাদী ছিলেন দিনাজপুর হতে ৩৭বছর হতে প্রকাশিত দৈনিক তিস্তার প্রকাশক ও সম্পাদক মো: মিজানুর রহমান লুলু। দিনাজপুরের স্থানীয় পত্রিকাদের নিয়ে গঠিত নিমতলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমান লুলু এবং বিএফইউজে কেন্দ্রীয় হতে স্থগিত দিন্জপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওয়াহেদুল আলম আটিষ্ট বিবাদী পক্ষ হওয়াতে এই মামলায় একাই লড়াই করতে হয়েছে দীর্ঘদিনের সাংবাদিক লড়াকু মো: মাহবুব আলমকে।

দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের সকল সাংবাদিক সমাজ এই মামলার রায়ের দিকে তাকিয়ে ছিলো। অনেকে এই মামলার জয় পরাজয়কে সাংবাদিক অধিকার আদায়ের চেয়ে-শক্তিশালী সাংবাদিক সংগঠন দিনাজপুর প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের একক শক্তি এবং বেতন ভাতা আদায়ের নির্ভিক সাংবাদিক আইনি শক্তির জয় পরাজয় হিসেবে দেখছেন।

দিনাজপুর সংবাদ পত্রের জগতে এই ধরনের মামলার রায় এটাই প্রথম। বাদি পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড: মো:সাইফুর রহমান খান (রানা) এবং বিবাদী পক্ষের এ্যাড: রেজাউল করীম।