‘দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ করতেই পরিকল্পিত জঙ্গি হামলা’

ইবি প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান বলেছেন, “দেশের উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্থ করতেই একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এ জঙ্গি হামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। এ অপতৎপরতাকে রূখে দিতে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা সবাই মিলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাস ও জঙ্গি মুক্ত রাখতে চাই। এজন্য স্ব স্ব অবস্থান থেকে আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমাদের কোমলমতি ছাত্রদের সচেতন করার জন্য শিক্ষকদের দায়িত্ব আছে। পাঠদানকালে শিক্ষার্থীদেরকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করা। আমরা প্রত্যেকে যদি দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করি তাহলেই বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশ থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসকে স্বমূলে উৎপাটন করতে পারবেন।”

গুলশান ও শোলাকিয়াসহ সারাদেশে জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে ও জাতীয় স্থিতিশীলতা বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আয়োজনে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

তিনি আরও বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম, ইসলাম ধর্ম কখনো সন্ত্রাস ও জঙ্গি কর্মকান্ড সমর্থন করে না। তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে নিরীহ মানুষদের হত্যা করছে। এদেশের বুকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকা- করে পার পাওয়া যাবে না। সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হামলার সাথে যারাই জড়িত বর্তমান সরকারের অধীনে তাদের উপযুক্ত বিচার হবেই।”

 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে এ মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে ও জনসংযোগ অফিসের সহকারি পরিচালক রাজিবুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও আলোচনা সভার শুরুতে গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় শহীদদের স্মরনে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

 

এসময় বক্তব্য রাখেন সামাজিক বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রুহুল আমিন, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি প্রফেসর ড. ইকবাল হোছাইন, ছাত্রউপদেষ্টা প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন, ইংরেজি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. এএইচএম আক্তারুল ইসলাম, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম জোহা, সহায়ক কর্মচারি সমিতির সভাপতি উকিল উদ্দিন, সাধারণ কর্মচারি সমিতির সভাপতি আতিয়ার রহমান প্রমূখ।

আলোচনা সভায় প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, “জঙ্গিবাদ দমনে দল মত নির্বিশেষে আমরা এক জায়গায় একত্রিত হয়েছি। আমাদের পরিবারের যেন কেও এর সাথে সম্পৃক্ত হতে না পারে। আমরা কোন সন্তানকে এমন জায়গায় দেখতে চায় না, যার জন্য আমরা লজ্জাবোধ করি। যদি ইবিতে কেও এর সাথে সম্পৃক্ত হয় আমরা তা কঠোর হস্তে দমন করব।”

শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এমতাজ হোসেন বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ শান্তি প্রিয়, সুতরাং জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকা- দূর করতে আমাদের সচেতন হতে হবে। এখনও পর্যন্ত আমাদের ক্যাম্পাসে জঙ্গিবাদের কোন প্রভাব পড়েনি। তাই কোন অবস্থাতে এর প্রভাব যেন এখানে না পড়ে সেদিকে আমাদের সবার খেয়াল রাখতে হবে।

বিশিষ্ট লালন গবেষক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত ও বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, “আমরা শান্তি, কল্যান ও প্রগতি চাই, যারা এগুলোর বিপক্ষে অবস্থান করে তারাই এ জাতিকে ধ্বংস করতে চায়। ইবির একটি ঐতিহ্য হচ্ছে- বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য। আমাদের মতানক্য থাকতে পারে কিন্তু মন্বন্তর নেই। ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা একই। তিনি আরও বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, সম্পৃতির ধর্ম, সাম্যের ধর্ম ও স্বাধীনতার ধর্ম। সুতরাং ইসলামে জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই। সেজন্য, আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় দেশ থেকে জঙ্গিবাদকে স্বমূলে নির্মূল করতে হবে।

এর আগে বেলা ১১টায় প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিবাদ র‌্যালি বের হয়। র‌্যলিটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় মিলিত হয়।

উল্ল্যেখ্য, জঙ্গি বিরোধী কর্মসূচী চলাকালীন সকল বিভাগের নিয়মিত ক্লাস বন্ধ ছিল। তবে চূড়ান্ত পরীক্ষা এ কর্মসূচীর আওতামুক্ত ছিল।

স/অ