দূতাবাসগুলো যে কারণে পুরনো পাসপোর্ট দেখতে চায়

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: নিরাপত্তা, ভুল-ভ্রান্তি, তথ্য গোপন আর মিথ্যা তথ্য যাচাই করতেই ভিসা আবেদনকারীদের পুরনো পাসপোর্ট দেখতে চায় ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি হাইকমিশন ও দূতাবাসগুলো। ধর্মভিত্তিক জঙ্গিদের অবাধ যাতায়াত বন্ধ করতে, আর উন্নত বিশ্বের সঙ্গে বিরোধে জড়ানো কট্টরপন্থী দেশগুলোতে কেউ যাতায়াত করছে কিনা, তা জানতেও পুরনো পাসপোর্টের তথ্য জানতে চাওয়া হয়। ভারত, যুক্তরাজ্য, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোই মূলত ভিসা আবেদনকারীদের পুরনো পাসপোর্টের খোঁজখবর নিচ্ছে।

ঘটনা-১

পুরনো পাসপোর্ট কতটা প্রয়োজনীয় সে বিষয়ে জামিল হোসেনের তেমন কোনও ধারণা ছিল না। কোনও দেশের ভিসার জন্য আবেদন করতে গেলে বর্তমান পাসপোর্টের সঙ্গে পুরনো পাসপোর্টের সংযুক্তিও যে জরুরি, সে বিষয়েও ধারণা ছিল না তার। ভারতে ভ্রমণ ভিসার জন্য আবেদন করে প্রথমবার যখন ভিসা পেলেন না, তখন বুঝতে পারলেন পুরনো পাসপোর্ট ও এসংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করা কতটা জরুরি।

জামিল জানান, বিজনেস ভিসা ছাড়া অন্য যেকোনও (ভ্রমণ, চিকিৎসা, গবেষণা, পড়াশুনা ইত্যাদি) ধরনের ভিসার জন্য আবেদন করলে পুরনো পাসপোর্টের সংযুক্তিও থাকতে হয়। ভিসা ফরমে পুরনো পাসপোর্টের তথ্য দিলেও বর্তমান পাসপোর্টের সঙ্গে পুরনো পাসপোর্ট সংযুক্ত না করেই আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি। তার ভাষায়— প্রথমবারের এই  ভুল সংশোধন করে পরের বার ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিয়ে ভিসা পেয়েছিলেন তিনি। এরপর গত বছরের আগস্টে ভারতে যান জামিল।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সূত্র জানায়, কী কী তথ্য ও কাগজপত্র জমা দিতে হবে, সে বিষয়ে ছোট একটি ব্যানার টানানো আছে ভারতীয় ভিসা সেন্টারগুলোতে। ভিসার আবেদন ফরমের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ওয়াসা কিংবা টেলিফোন বিলের ফটোকপি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ডলার এন্ডোর্সমেন্ট সার্টিফিকেটের ফটোকপি, ব্যক্তিগত অথবা প্রাতিষ্ঠানিক প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হয়। অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিংবা শিশুদের ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের প্রাপ্ত ভিসার ফটোকপি, অথবা জমা স্লিপের ফটোকপি এবং সরকারি চাকরিজীবী হলে গভর্নমেন্ট অর্ডার (জিও) জমা দেওয়ার নিয়ম।

পেশায় ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি, কৃষিজীবী হলে জমির খতিয়ানের ফটোকপি, চাকরিজীবী হলে প্রতিষ্ঠানের অনাপত্তিপত্র (এনওসি), ছাত্র হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড কিংবা বেতন জমা দেওয়ার রশিদ, পাসপোর্টের ফটোকপি, পুরনো পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে লস সার্টিফিকেটের সঙ্গে সাধারণ ডায়েরির কপি জমা দিতে হয়। নতুন (বর্তমান) পাসপোর্টের সঙ্গে সব পুরনো পাসপোর্ট সংযুক্ত করতে হবে এবং পুরনো পাসপোর্টের সঙ্গে নতুন পাসপোর্টের তথ্যের সামঞ্জস্যতা থাকতে হবে। ভারতীয় ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে এ নিয়ম নিয়ম।

মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াও সর্বশেষ ইউটিলিটি বিলের অনুলিপি, মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেটের মূল ও ফটোকপি, মুক্তিযুদ্ধের গেজেট কপি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ডলার এন্ডোর্সমেন্টের সার্টিফিকেটের ফটোকপি অথবা  আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড থাকতে হবে। এছাড়া, বর্তমান (নতুন) পাসপোর্টের ফটোকপি ও সব পুরনো পাসপোর্ট জমা দিতে হবে।

ভারতীয় হাইকমিশন সূত্র জানায়, বিজনেস ভিসা ছাড়া যেকোনও ভিসার ক্ষেত্রে পুরনো সব পাসপোর্ট জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। কেন এ নিয়ম জানতে চাইলে দূতাবাস সূত্র জানায়, নিরাপত্তার বিষয়টি ছাড়াও অনেকের ঠিকানা পরিবর্তন হয়। আবেদনকারীর নামের বানান ভুল কিংবা সংশোধনী থাকে। সে কারণেই দূতাবাসের কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা রয়েছে, যাতে তারা নতুন ও পুরনো পাসপোর্ট দেখে ভিসা দেন।

ঘটনা-২

বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। অর্থনীতি, সামরিক শক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় দেশটির অবস্থান শীর্ষে। দেশটিকে ঘিরে আকর্ষণ বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চল ও মত-পথের মানুষের। বাংলাদেশের নাগরিকরাও এর বাইরে নয়। স্থায়ীভাবে বসবাস, পড়াশুনা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা, চিকিৎসাসহ নানা কারণে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশের মানুষেরাও। কিন্তু ইচ্ছে করলেই দেশটিতে যাওয়ার উপায় নেই। সেখানে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত আমন্ত্রণপত্রের যেমন প্রয়োজন হয়, তেমনি ভিসা পেতে হলে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও তথ্যও জমা দিতে হয়।

সাংবাদিক খালিদ (ছদ্মনাম) অনেকদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের সুযোগ খুঁজছিলেন। সেই সুযোগ তিনি পেয়েও যান গত বছরের সেপ্টেম্বরে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ঘুরে এসেছেন তিনি।

খালিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভিসা ফরম পূরণ করে জমা দেওয়ার পর তার পাসপোর্ট রেখে দেওয়া হয়। পরে ইমেইল করে বেশকিছু তথ্য ও সেসবের প্রমাণপত্র চাওয়া হয় তার কাছে।

খালিদের কাছে যেসব তথ্য জানতে চাওয়া হয়, তার মধ্যে রয়েছে— গত ১৫ বছরে কয়টি পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন তিনি। তার কয়টি মোবাইল নম্বর। ফেসবুক বা অন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়টি অ্যাকাউন্ট ছিল বা আছে। ঢাকা শহরে কোথায় কোথায় তার আবাস ছিল। কোন কোন দেশে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। সেসব দেশে কতদিন করে থেকেছেন। বিদেশে যাওয়ার কারণ কী এবং সেখানে যাওয়ার খরচ কারা বহন করেছে।

খালিদ বলেন, ‘ওরা বারবার যাচাই করতে চেয়েছে যে, কতটা ভ্যালিড রিজনে যাচ্ছি। আমি সেখানে গিয়ে থেকে যাবো কিনা, প্রিভিয়াস কোনও ব্যাড হিস্ট্রি আছে কিনা, এসব ক্রস চেক করার জন্য তথ্যগুলো নেয় ওরা, সরাসরি এসব বিষয়ে জানতেও চায়।’

তিনি জানান, তুরস্কে একবার এক সেমিনারে অংশ নিয়েছিলেন। কেন তিনি তুরস্কে গিয়েছিলেন এনিয়ে ভিসা অফিসারের আগ্রহ ছিল। তার কাছে বারবার জানতে চাইছিলেন তুরস্কের প্রতি বিশেষ আগ্রহ আছে কিনা।

খালিদের ভাষ্য, ‘‘বাংলাদেশসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশের নাগরিকেরা ‘ইসলামিক স্টেট-আইএস’র কর্মী হয়ে সিরিয়া ও ইরাকে প্রবেশের পথ হিসেবে তুরস্ককে ব্যবহার করে থাকেন। একথা কে না জানে। তারপরও ভিসা অফিসার বিষয়টি সরাসরি না বলে নানাভাবে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন আইএস’র সঙ্গে (আমার) কোনও সম্পর্ক আছে কিনা।’’

খালিদ জানান, তার পুরনো পাসপোর্টে তুরস্কের ভিসা ছিল বলে নির্দিষ্টভাবে ওই পাসপোর্টটি দেখতে চেয়েছিলেন ভিসা অফিসার। তবে অন্য পাসপোর্ট বা অন্যদেশের ভিসা নিয়ে তিনি তেমন কিছু জানতে বা দেখতেও চাননি।

পাসপোর্ট ও ভিসার প্রয়োজনীয়তা যে কারণে

পাসপোর্ট-ভিসা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিচয়ের মাপকাঠি হিসেবে কাজ করে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় পাসপোর্ট ও ভিসার। পাসপোর্ট যেকোনও দেশের নাগরিকের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ দলিল বা প্রমাণপত্র। সব দেশই চায় তার দেশে কী পরিমাণ বিদেশি প্রবেশ করছে ও দেশ ছেড়ে কতজন বিদেশ যাচ্ছে, সে হিসাব ও তথ্য সংরক্ষণ করতে। এই ব্যবস্থায় পাসপোর্ট হলো তথ্য সংরক্ষণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। নিখুঁতভাবে তথ্য সংরক্ষণের প্রধান কারণ নিরাপত্তা। কে কখন দেশ ছাড়ছে বা দেশে আসছে, বা কখন কোন বন্দর দিয়ে আরেক বন্দরে যাচ্ছে, তা জানার প্রয়োজন রয়েছে রাষ্ট্রের।

যে কারণে প্রয়োজন পুরনো পাসপোর্ট  

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা দ্য হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্সের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকলে বিশ্বের ৩৮টি দেশে ভিসা ছাড়াই প্রবেশ করা যায়। বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকেরা ওই ৩৮টি দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে পোর্ট ভিসা বা ভিসা অন-অ্যারাইভাল সুবিধা পান। পোর্ট ভিসা বা ভিসা অন-অ্যারাইভাল সুবিধার জন্য খুব বেশি তথ্য বা প্রমাণের প্রয়োজন হয় না। তবে ভারত, যুক্তরাজ্য, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর দূতাবাস ভিসা আবেদনের সঙ্গে পুরনো পাসপোর্টের তথ্যসহ পুরনো পাসপোর্টের সংযুক্তিও দেখতে চায়। যাদের একটি মাত্র পাসপোর্ট তাদের বিষয়টি আলাদা।

মূলত নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টতার কারণে এসব দেশের দূতাবাস আবেদনকারীদের পুরনো পাসপোর্টকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তারা পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, তুরস্ক, ইরান, উত্তর কোরিয়ার কর্মকাণ্ডকে সন্দেহের চোখে দেখে। আবেদনকারীর বর্তমান পাসপোর্টে এসব দেশের ভিসা না থাকলেও পুরনো পাসপোর্টে আছে কিনা, তা সরেজমিন দেখে যাচাই করতে চায় তারা। কোনও দেশ বা বন্দর ভিসা না দিয়ে কাউকে ‘ডিপোর্ট’ করেছে কিনা, পাসপোর্টে ‘রিজেক্ট’ সিল পড়েছে কিনা,  তাও যাচাই করার জন্য পুরনো পাসপোর্ট দেখতে চাওয়া হয়। কোন কোন পাসপোর্ট ‘রি-ইস্যু’ করা। অর্থাৎ নামের বানান ভুল, জন্ম তারিখ ভুল, সন্তান বা স্ত্রীর নামের বানান ভুল বা এজাতীয় তথ্যে ভুল থাকার কারণে পাসপোর্ট ‘রি-ইস্যু’ করার সুযোগ আছে। ‘রি-ইস্যু’ হওয়া পাসপোর্টে পুরনো পাসপোর্টের তথ্য থাকে। তবে ভিসার আবেদন করলে ওই ভুল আসলে কতটা সত্য বা বাস্তব তা যাচাই করতেও পুরনো পাসপোর্ট দেখতে চায় অনেক দেশের দূতাবাস। অনেকের ক্ষেত্রে বর্তমান ও পুরনো পাসপোর্টের তথ্যেও নানা ধরনের গড়মিল দেখা যায়। সেক্ষেত্রেও বর্তমান ও পুরনো পাসপোর্ট যাচাইয়ের প্রয়োজন হয়। তবে পুরনো পাসপোর্ট যদি হারিয়ে যায়,তাহলে পাসপোর্ট অফিসের ক্লিয়ারেন্স ও সাধারণ ডায়েরির (জিডি) কপি জমা দিতে হয়।

ঢাকায় বিভিন্ন দূতাবাস ও হাইকমিশন সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) সিদ্ধান্ত মেনে ২০১০ সালের ১ এপ্রিল বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) তৈরি ও বিতরণ শুরু করে। আর ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে হাতে লেখা পাসপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় বাংলাদেশে। এমআরপি আসার পর হাইকমিশন ও দূতাবাসগুলো লক্ষ্য করে যে, ভিসা ফরমে আবেদনকারীরা বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের কথা উল্লেখ করছে। এবিষয়ে তাদের কাছে প্রমাণ চাইলে বলা হয়— হাতে লেখা পুরনো পাসপোর্টে উল্লেখ করা দেশের ভিসা আছে। পরে অবশ্য তারা প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়। এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেও ভিসা আবেদনকারীদের কাছে পুরনো পাসপোর্ট দেখতে চাওয়ার নিয়ম করা হয়।

শুধু যে ভিসার আবেদনেই পুরনো পাসপোর্ট উপস্থাপন বা তথ্যের প্রয়োজন হয়, তা কিন্তু নয়। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন পাসপোর্ট করার সময়ও পুরনো পাসপোর্টের তথ্যের উল্লেখ করতে হয়।

বিভিন্ন দেশের হাইকমিশন ও দূতাবাসে পুরনো পাসপোর্ট দেখতে চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণেই হাইকমিশন বা দূতাবাসগুলো পুরনো পাসপোর্টের তথ্য জানতে চায়, সরাসরি দেখতেও চায়। যাদের পুরনো পাসপোর্ট আছে তাদের দেখাতে আপত্তি করার কোনও কারণ আছে বলে মনে করি না। আর এই নিয়ম শুধু বাংলাদেশিদের  জন্য না। বাংলাদেশের ভিসা পেতেও অনেক বিদেশিকে পুরনো পাসপোর্ট দেখাতে হয়। ওই কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বব্যাপী ধর্মভিত্তিক সন্ত্রাসবাদ বিস্তৃত হওয়ার কারণেও পুরনো পাসপোর্ট নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি বেড়েছে। এতে করে তথ্য গোপন করার বিষয়টিও অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

এবিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির বলেন, ‘মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) যখন ছিল না, হাতে লেখা পাসপোর্টের যুগে অনেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করতো। এ বিষয়গুলো শুধু যে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ জানে তা কিন্তু নয়। বাংলাদেশে যেসব দেশের হাইকমিশন ও দূতাবাস আছে, তারাও বিষয়টি জানে। এ কারণেও এমপি আসার পর ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরনো পাসপোর্ট দেখার বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে। বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে ধর্মভিত্তিক জঙ্গিবাদ উত্থানের নানা প্রশ্নও তোলা হচ্ছে। যারা বা যেসব দেশ এসব অভিযোগ তুলছে, তারাও বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে। সেক্ষেত্রে যদি কেউ পুরনো পাসপোর্ট থাকার বিষয়ে ভিসা ফরমে উল্লেখ করে, তাহলে পুরনো পাসপোর্ট উপস্থাপনের বিষয়টিও গুরুত্ব পায়।’

তিনি বলেন, ‘আবার দেখা যায়, কানাডাসহ অনেক দেশের ভিসাই দিল্লি বা সিঙ্গাপুর থেকে ইস্যু হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের হাইকমিশন বা দূতাবাস থেকে শুরু থেকেই নতুন ও পুরনো সব পাসপোর্টসহ নানা ধরনের তথ্য জমা দিতে বলা হয়।