‘তোর ছেলেকে ঘুমিয়ে দিয়েছি’

শাহিনুল ইসলাম আশিক:

ভোর রাতে স্বপ্নে দেখি মানিককে কারা যেনো অনেক মারধর করছে। মানিক বলে ‘মা আমাকে বাঁচা’। ঘুম ভেঙ্গে ছোট ভাই রানাকে বলে ‘মানিকের মোবাইলে ফোন করতো, কোথায় আছে সে।’ ১০-১২ বার ফোন করার পরে এক লোক ধরে বলে, ‘ওর হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছি। তোর ছেলেকে ঘুমিয়ে দিয়েছি।’

গতকাল সোমবার সকালে তার ছেলের হত্যা রহস্য নিয়ে এমনটি বলছিলেন নিহত কিশোর মানিকের মা মুরশিদা বেগম।

গত শুক্রবার ঢাকায় কাজের সন্ধানে যায় রাজশাহী নগরীর মেহেরচন্ডি এলাকার মৃত আনফর রহমানের ছেলে মুজাহিদ ওরফে মানিক (১৩) এবং মেহেরচন্ডির জামালাপুর এলাকার মৃত রুহুল আমিনের ছেলে বিজয় (১৪)। পরের দিন সকালে তাদের মৃত্যুর খবর আসে।

তবে দুই পরিবার জানে না তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী। এদিকে দুই কিশোরের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। গত রোববার রাতে ওই দুই কিশোরের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে এনে দাফন করা হয়।

পারিবারিক সূত্র মতে, গত শনিবার সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া স্টেশনের পাশে থেকে জিআরপি পুলিশ মানিক ও বিজয়ের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

নিহত মানিকের মামা রানা বলেন, দুই কিশোর মানিক ও বিজয় বন্ধু ছিল। তারা বাড়িতে কাউকে কিছু না বলে শুক্রবার বিকেলের ট্রেনে ঢাকায় যায় কাজের সন্ধানে। মানিক রাজশাহীর মুনলাইট ফার্মেসি নামের একটি ওষুধের দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করত।

পুলিশ সেই পরিচয়পত্র দেখে মুনলাইট ফার্মেসিতে ফোন দেয়। এরপর মুনলাইট ফার্মেসি থেকে বিজয় ও মানিকের বাড়িতে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে শনিবার সকালেই রওনা দেয় পরিবারের লোকজন।

বিজয়ের মা তসলিমা বেগম বলেন, চার মাস আগেও ঢাকায় গিয়েছিলো বিজয়। কিন্তু সেইদিনই চলে আসে। এবার কি জন্যে গেছে বলতে পারবো না। কিন্তু যে কাজেই যাক, এবার ফিরলো লাশ হয়ে। আমরা ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। এর বিচার চাই আমি।’

চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, টুঙ্গিপাড়া থানা থেকে মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছিলো। পরে পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে দুই কিশোরের লাশ নিয়ে এসে দাফন করেছে। কিন্তু কিভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে-তা বলতে পারব না।

 

স/আ