দুর্গাপুর পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর বাইরে মেয়রের প্রভাব খাটিয়ে সকারি পুকুর দখল, নিয়োগ বাণিজ্য, এডিবির প্রকল্পে হরিলুট, টিআর কাবিখার টাকা লুট, চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ তুলে সম্প্রতি রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

গত ১৮ অক্টোবর করা ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০০৮ সালে দুর্গাপুর পৌরসভার প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েই নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তোফাজ্জল হোসেন। ওই পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন তিনি। এরপর ২০১১ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে আরও ব্যাপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি।

নাটোরের নলডাঙ্গায় শ্বশুর বাড়ি এলাকায় স্ত্রীর নামে ৩০-৪০ বিঘা জমি কিনেন। দলীয় দাপটে নিজ এলাকা ধরমপুরে সরকারি খাস পুকুর দখল রাখা, পৌরসভায় ১০ জনকে চাকরি দেওয়ার নামে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রত্যেকের নিকট থেকে ৫-১০ লাখ টাকা করে আদায় করে চাকরি দিতে পারেননি। এরপর টাকাও ফেরত দেননি। তবে অব্যাহত চাপের কারণে আনোয়ার নামের একজনকে শেষে ৫ হাজার টাকা বেতনে এ্যাডহকে নিয়োগ দিয়েছেন পৌর মেয়র।

এছাড়াও গত উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রীর সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল মজিদের হয়ে কাজ করেন। নির্বাচনের আগের দিন গোপন বৈঠকের সময় তোফাজ্জলসহ ১২জনকে গ্রেপ্তার করে ৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডও দেন ভ্রাম্যমান আদালত। গত সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মুনসুরের হয়ে কাজ করার নামে বিপুল অংকের টাকাও লোপাট করেন মেয়র তোফাজ্জল হোসেন।

এর বাইরে নিজের প্রভাব খাটিয়ে দুর্গাপুরে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের চাকরি পেতে সহযোগিতা করেছেন মেয়র তোফাজ্জল হোসেন। প্রতিটি নিয়োগের বিনিময়ে তিনি বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এতে করে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন দলের ত্যাগী নেতাদের ছেলে-মেয়েরা।
মেয়র তোফাজ্জল হোসেন পৌরসভার টেন্ডার বাণিজ্য করেও বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর বাইরে এডিবির টাকা দিয়ে কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের ব্যবস্থা করেন। সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করে তিনি প্রকল্পের টাকা দিয়ে বেতন-বোনাসের ব্যবস্থা করেছেন। এর বাইরেও নানা অভিযোগ তোলা হয়েছে মেয়র তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে।

এসব নিয়ে জানতে চাইলে মেয়র তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমি কোনো অনিময়-দুর্নীতি করিনি। আমার বিরুদ্ধে এক শ্রেণির নেতাকর্মীরা মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। যাতে আমি আগামী পৌর নির্বাচনে দলের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়। তবে অভিযৈাগের তদন্ত করলে কোনো সতত্য মিলবে না।’