দুর্গাপুর আ.লীগের প্রতিনিধি সভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশংকা

দুর্গাপুর প্রতিনিধি :উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের প্রতিনিধি সভাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের মধ্যে ব্যপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য গ্রুপকে বাইরে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম প্রতিনিধি সভার আয়োজন করায় নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দেয় এই উত্তেজনা।

তবে এই উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মন্তব্য করছেন অনেক সিনিয়র নেতারা। আর এই প্রতিনিধি সভাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে চলছে পাল্টা পাল্টি আলোচনা সভা।

জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তার নেতাকর্মীদের নিয়ে আগামিকাল (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রতিনিধি সভার আয়োজন করেন। এর পর থেকে ওই সভার পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নেয়া শুরু করেন আওয়ামী লীগের দুইটি গ্রুপ। এদিকে ওই সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেনের যোগ দেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়লে নজরুল সমর্থকদের অনেক নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ দেখা দেয়। 

নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, মেয়র তোফাজ্জল হোসেন গত উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে অভ্যান্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। যার ফলে দলের তৃণমূল পর্যায়ের এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বেড়ে যায়। স্থানীয় আ’লীগের নেতাদের মধ্যে কোনো ভাবে তৃণমূল পর্যায়ের এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিরসন এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে দেননি তোফাজ্জল। এমনকি দলের গুরুত্বপূর্ণ দুইটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠে ভোট করেন তিনি। জেলা পরিষদ ও উপজেলা নির্বাচনে তিনি এটি করেন।

গত উপজেলা নির্বাচনে আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামকে দল মনোনয়ন দেন। কিন্ত ব্যক্তি স্বার্থের কারণে সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র তোফাজ্জল হোসেন তৃণমূল পর্যায়ের এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব উৎসাহ দিয়ে তুঙ্গে নিয়ে যায়। দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রাকাশ্যে মাঠে নামে তিনি। বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেন তিনি। 

এমনকি গোপন বৈঠকের সময় অস্ত্র ও নগদ অর্থসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হোন মেয়র তোফাজ্জল হোসেন। এর পর ২০১৬ সালে পৌর নির্বাচন করেই দলীয় সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। র্দীঘ সময় দারার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল পর্যায়ের এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব তুঙ্গে তুলেন মেয়র তোফাজ্জল।

এদিকে, বর্তমান এমপি প্রফেসার ডা.মনসুর রহমানের এক বছর না যেতেই সেই বির্তকিত নেতা তোফাজ্জল হোসেন তার বিরুদ্ধেও অবস্থান নেন।

এতে করে উপজেলা আওয়ামীলীগের সেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া। উপজেলা কয়েকজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, মেয়র তোফাজ্জলের কারনে আওয়ামী লীগ পরিবার ভেঙ্গে চুরে তছনছ হতে চলেছে। তিনি শুধু নিজের সার্থ ছাড়া কিছু চিন্তা করেন না। এমনকি একই পরিবারে দলের সব পদ নিয়ে বসে আছেন তিনি।

দলের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ওই নেতা আগমি পৌরসভার মনোনয়নের আশায় আবার নতুন ছক কষছেন।

এবিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম বলেন, মূলত আমরা উপজেলা নির্বাচনের পর উপজেলা ভোটকে কেন্দ্র করে সভাপতি সম্পাদক দুই মেরুতে ছিলাম। আমার দলের নেকাতর্মীদের কথা চিন্তা করে সকল প্রকার বিভেদ ভুলে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে কাজ করার উদ্যোশে এই প্রতিনিধি সভার আয়োজন করেছি।

এবিষয়ে দুর্গাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খুরশিদা বানু কনা বলেন, দুর্গাপুর থানা পুলিশ সজাগ রয়েছে। কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না হয় সে জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

স/আ.মি