দুর্গাপুরে দিন দুপুরে কোটি টাকার মাছ লুট! থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ১

দুর্গাপুর প্রতিনিধি:

রাজশাহীর দুর্গাপুরে দিন দুপুরে পুকুর থেকে প্রায় কোটি টাকার মাছ লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাছ লুটের ঘটনায় ১৮ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সময় পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে রেজাউল করিম নামের এক বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়াও তিনটা ট্রাক ও মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত জাল জব্দ করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল করিম ঝালুকা গ্রামের মৃত হারু মোল্লার পুত্র ও ঝালুকা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক বলে জানায় পুলিশ। ঘটনার পর পুঠিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিবুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) দিনে দুপুরে বিএনপি নেতা রেজাউল করিমের নেতৃত্বে উপজেলার ঝালুকা গ্রামের ওই পুকুরে গিয়ে পাহারাদারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বেড় জাল দিয়ে মাছ ধরে ট্রাক যোগে নিয়ে যেতে থাকে।

খবর পেয়ে পুকুর মালিক আলহাজ্ব মাসুদ রানা পুকুরে গেলে এজাহার নামীয় আসামীরা তাকেও হাসোয়া নিয়ে তাড়া করে। এ সময় মাসুদ রানা জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিএনপি নেতা রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়াও মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত ২০০ ফিট বেড় জাল ও তিনটা ট্রাক জব্দ করে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই বিএনপি নেতা রেজাউল করিমসহ ১৮ জনকে আসামী করে দুর্গাপুর থানায় এজাহার দায়ের করা হয়। পুকুর মালিক আলহাজ্ব মাসুদ রানা জানান, প্রায় ১৫ বিঘা আয়তনের পুকুরটি তিনি কিনে নিজের নামে নামজারী করে নিয়েছেন। এমনকি অদ্যবধি ওই পুকুরে তিনি মাছ চাষ করে আসছেন।

শুক্রবার দুপুরে ওই পুকুরের পাহারাদারকে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে পুকুরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির চাষকৃত মাছ ধরে লুট করে নিয়ে যায়। এতে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন মাসুদ রানা। তিনি আরও বলেন, পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ গিয়ে ৩৫ মণ মাছ জব্দ করলেও আগেই বেশিরভাগ মাছ ট্রাকে করে ঢাকায় বিক্রির উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়। মৎস্য ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মাসুদ রানা অভিযোগ করেন, পুকুরটি কেনার পর থেকেই মাছচাষ শুরু করলে বিএনপি নেতা রেজাউল করিম বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলো। যে কোন সময় তারা পুকুরের মাছ লুট করে নিতে পারে এমন আশংকা ছিলো তার।

পুকুরটি নিয়ে আদালতে একটি ফৌজদারি মামলাও চলমান রয়েছে। যার নম্বর ২৬৭পি/২০২৪ (দুর্গাপুর)। দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, মাছ লুট করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া মাছ পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত তিনটি ট্রাক, মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত বেড় জাল জব্দ করে থানায় রাখা হয়েছে।

পুলিশ পৌছার আগেই কিছু মাছ ট্রাকযোগে ঢাকায় পাঠানো হয়। তবে প্রায় ৩৫ মণ উদ্ধার করে পুকুর মালিককে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই পুকুর মালিক আলহাজ্ব মাসুদ রানা বাদী হয়ে রেজাউল করিমসহ ১৮ জনকে আসামী করে এজাহার দায়ের করলে সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। এছাড়া শনিবার সকালে গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল করিমকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।