শনিবার , ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

দল–জোটের জটিল সমীকরণ

Paris
সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৮ ৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পঞ্চগড়ের রাজনৈতিক অঙ্গন সরব হয়ে উঠেছে। তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত পঞ্চগড়-১ আসনের মনোনয়ন লড়াইয়ে নেমেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। মনোনয়ন পেতে তৎপর বর্তমান সাংসদ জাসদের (আম্বিয়া-নাজমুল) সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান এবং জাতীয় পার্টির (জাপা) জেলা সাধারণ সম্পাদক আবু সালেকও।

দীর্ঘদিন কমিটি না থাকা জেলা বিএনপির দুই পক্ষই মনোনয়ন চাইবে। বিএনপির শরিক জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) নেতারাও এখানে জোটের মনোনয়ন চান।

পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলা নিয়ে গঠিত পঞ্চগড়-১ আসনটি ১৯৯১ সাল থেকে বিএনপির দখলে ছিল। ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারকে হারিয়ে সাংসদ হন আওয়ামী লীগের মজাহারুল হক প্রধান। ২০১৪ সালে মনোনয়ন পেলেও শেষ মুহূর্তে জাপাকে আসনটি ছেড়ে দিতে হয়। কিন্তু সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক আবু সালেক। ভোটযুদ্ধে তিনি জাসদের (ইনু) তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের কাছে হেরে যান।

আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবেও মাঠে নেমেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মজাহারুল হক প্রধান। মনোনয়ন পেতে তিনি ছাড়াও মাঠে নেমেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের জনপ্রেক্ষিত কর্মকর্তা নাইমুজ্জামান।

মজাহারুল হক বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে জননেত্রী শেখ হাসিনা ফোন করে দেশ ও জনগণের স্বার্থে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলেন। আমি নির্দেশটি পালন করি। এ কারণে মনে করি এবার তিনি আমাকেই মনোনয়ন দেবেন।’

পঞ্চগড়ের আনাচকানাচে ঘুরে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে কথা বলছেননাইমুজ্জামান। তিনি দাবি করেন, তরুণ ভোটারদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বেশি। আর এ আসনের অর্ধেকের বেশি ভোটারের বয়স ৩৫ বছরের মধ্যে। বিভিন্ন ভোটারের বাড়িতে রাতে থেকে উঠান বৈঠকও করছেন তিনি। নাইমুজ্জামান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা বাস্তবায়নে সারা দেশে যেমন কাজ করেছি, নিজের জেলাতেও এ নিয়ে অনেক কাজ করেছি। আওয়ামী লীগের একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি মনোনয়ন চাইব।’

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাতও এলাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি বলেন, ‘জনগণের ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান আর দলীয় নেতা-কর্মীদের ভোটে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। এখন এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। আমি এবার মনোনয়ন পাওয়ার দাবিদার।’

মহাজোটের শরিক বর্তমান সাংসদ নাজমুল হক প্রধানও বিভিন্ন উন্নয়নকাজের উদ্বোধন, সভা-সমাবেশসহ গণসংযোগ করছেন। সম্প্রতি জেলা জাসদের বর্ধিত সভায় তাঁকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। তিনি এবারও দলের প্রার্থী হবেন বলে আশা করছেন।

জাপার আবু সালেক বলেন, ‘গত নির্বাচনে মহাজোটের মনোনীত প্রার্থী হয়েও আওয়ামী লীগের কিছু নেতার প্রতিহিংসামূলক আচরণের কারণে অল্প ভোটে হেরে যাই।’ জাপা এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিলে তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করছেন।

বিএনপিতে কোন্দল

২০০৮ সালে আসনটি হাতছাড়া হওয়ার পর থেকেই পঞ্চগড় বিএনপিতে কোন্দলের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন ধরে নেই জেলা কমিটি। জমির উদ্দিন সরকার এবং পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র তৌহিদুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে এখন চলছে ঠান্ডা লড়াই।

জমির উদ্দিনের অনুসারীরা বলছেন, এবারও তাঁর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দল তাঁকে অন্য কোনো আসন থেকে প্রার্থী করলে অথবা বয়সজনিত কারণে তিনি নির্বাচন না করলে তাঁর ছেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নওশাদ জমিরকে প্রার্থী করার জন্য চেষ্টা করা হবে।

তবে এমন সিদ্ধান্ত এলে তৃণমূলে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা তৌহিদুল ইসলামের। মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, জমির উদ্দিন সরকার ও তাঁর ছেলের মধ্যে কোন্দলের কারণেই প্রায় নয় বছর জেলা কমিটি নেই। বাবার যাঁকে পছন্দ ছেলের তাঁকে পছন্দ নয়, অবস্থাটা হয়েছে এমন।

জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এম এ মজিদ বলেন, জমির উদ্দিন সরকার নির্বাচন করুক, এটাই পঞ্চগড়ের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা চান। কোনো কারণে তিনি নির্বাচন না করলে তাঁর ছেলে মনোনয়ন নিয়ে আসবেন।

২০-দলীয় জোটের শরিক জাগপার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত শফিউল আলম প্রধানের মেয়ে তাসমিয়া প্রধানও জোট থেকে মনোনয়ন চাইবেন। কেন্দ্রীয় জাগপার সহসভাপতি হিসেবে তাসমিয়া পঞ্চগড়-১ ও পঞ্চগড়-২ আসনে গণসংযোগ করছেন। জোটের নীতিনির্ধারকেরা যে আসন থেকেই মনোনয়ন দেবেন, সেখানেই তিনি নির্বাচন করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন।

জেলা জামায়াতের আমির আবদুল খালেক বলেন, ‘১৯৯৬ সালে পঞ্চগড়-১ আসনে নির্বাচন করেছি। আমরা দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। আর দল চাইবে জোটের কাছে। কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশ নেব।’

এদিকে গত ২৫ জুন পঞ্চগড়ে এক পথসভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ঘোষণা করা হয় সংগঠনের জেলা কমিটির উপদেষ্টা খন্দকার খাজা আলমকে।

সর্বশেষ - রাজনীতি