‘তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র ও সমাজকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তারা যাতে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারে সেজন্য তাদের সে সুযোগ তৈরী করে দিতে হবে। কারণ অন্যান্য সাধারণ মানুষের মতো তারাও মানুষ। তাদের শিক্ষিত করার পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রের সাথে সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। না হলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।’
আজ সোমবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর হোটেল ওয়ারিসানের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘অনাদৃত সম্প্রদায় হিজড়া সর্ম্পকে সমাজ ভাবনা’ বিষয়ক এক পরামর্শক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বেসরকারি সংস্থা ‘বন্ধু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইট‘ বিভাগীয় পর্যায়ে এই সভার আয়োজন করে।

সভায় রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু হায়াত মো. রহমতুল্লাহ বলেন, ‘হিজড়াদের অধিকার নিশ্চিতে সমাজের প্রতিটি মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের বৈষম্য থেকে রক্ষা করে সামাজিক নিরাপত্তা বিধান করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। হিজড়াদের জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আশ্রয়ন প্রকল্প গুচ্ছ গ্রাম গড়ে তুলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যেখানে তাদের জন্য
আবাসন ব্যবস্থা করা হবে। প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে করে তোলার পর প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কাজে লাগাতে ঋণের ব্যবস্থাও করা হবে ‘।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের প্রধান চিকিৎসক মো. তবিবুর রহমান শেখ বলেন, দেশে প্রতিবন্ধীদের জন্য যেমন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, একইভাবে হিজড়াদের ক্ষেত্রেও যেন অনুরূপ সুযোগ-সুবিধার নিশ্চিত করা হয়। প্রতিবন্ধীদের জন্য দেশে বিশেষায়িত স্কুল রয়েছে। হিজড়াদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে তাদের জন্য আবাসিক স্কুল স্থাপন করতে হবে। তাদের বাধ্যতামূলক শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্বাস্থ্য বীমা চালু করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

হিজড়াদের সংগঠন ‘দিনের আলো হিজড়া সংঘ’র সাধারণ সম্পাদক সাগরিকা খান বলেন, আমরা সমাজের বোঝা হতে চাই না। সব মানুষেরই কোনো কোনো সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেগুলো কাটিয়ে উঠতে চারপাশের মানুষের সহায়তা প্রয়োজন হয়। সমাজের প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ জায়গা থেকে আমাদের সহায়তা করলে আমরাও আমাদের দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারবো। সমাজে আমাদের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত হলে হাত পেতে ভিক্ষা করার লজ্জা থেকে আমরা মুক্তি পাবো।

পরামর্শক সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যাললেয়র নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. কামাল পাশার সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর ডেপুটি সিভিল সার্জন বার্নাবাস হাসদাক, রাবির নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম ফারুক সরকার, রাজশাহী সমাজসেবা কর্মকর্তা আশিকুজ্জামান, বন্ধু
সোস্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রোগ্রাম ম্যানেজার উম্মে ফারহানা জারিফ কান্তা, সিনিয়র লিগ্যাল অফিসার সারা আরজুমান।

স/শা