তালিকা হচ্ছে পুলিশ মাদকসেবীদের

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: 

সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে হলে প্রথমে নিজেদের মাদকমুক্ত হতে হবে। সর্ষের মধ্যে ভূত রেখে মাদক নির্মূল করা যাবে না। তাই মাদক অভিযান জোরদারের পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সদস্যদের মধ্যে যারা মাদকাসক্ত রয়েছে, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তাদের নামের তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।

তালিকা ধরে প্রথমে তাদের সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে। তারপরও যদি মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যরা সংশোধন না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন কমিশনার। বৃহস্পতিবার ডিএমপি সদর দফতরে মাসিক অপরাধ সভায় এ নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

এ সময় তিনি রমজান ও ঈদে থানা পুলিশের নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশংসা করেন। রাজধানীর একাধিক থানার ওসি ও ডিএমপি ক্রাইম বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হলে প্রথমে নিজেদের মাদকমুক্ত করতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্য মাদক সেবন কিংবা মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কমিশনার বলেন, পুলিশ সদস্যদের মধ্যে যারা মাদকাসক্ত সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তাদের নামের তালিকা তৈরি করতে হবে। তাদের সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সংশোধন হলে ভালো, আর না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না। আর কোনো পুলিশ সদস্য যদি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হবে।

মাসিক অপরাধ সভায় অংশগ্রহণকারী একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, সিডিউল করে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। মাদক উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের গ্রেফতার করতে হবে। অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করতে হবে। জঙ্গিরা যাতে ঢাকায় কোনো আস্তানা গড়তে না পারে সেজন্য ভাড়াটিয়া ফর্ম হালনাগাদ করতে হবে। বাড়ির মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। নতুন ভাড়াটিয়া উঠলেই তাদের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।

কমিশনার থানার ওসিদের বলেন, থানায় এসে জনগণ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার নির্দেশ দেন কমিশনার। বিট পুলিশিং ও উঠোন বৈঠকের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

থানায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতারের জোর নির্দেশনা দেন। ওয়ারেন্টভুক্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার না করে তার কাছ থেকে কোনো সুবিধা নিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আসন্ন নির্বাচনে যাতে কোনো গোষ্ঠী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোনো গোষ্ঠী যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করে তাহলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

জুনের মাসিক সভায় ভালো কাজের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্ত সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে কমিশনার বলেন, পবিত্র রমজান ও ঈদে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সঠিকভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করার ফলে নগরবাসীকে একটি সুন্দর, নিরাপদ রমজান ও ঈদ উপহার দিতে পেরেছি। এজন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তিনি আরও বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে।

যার যার অবস্থান থেকে নিজ উদ্যোগে ও কেন্দ্রীয়ভাবে মাদকবিরোধী যে অভিযান চলমান রয়েছে তা সব মহলে প্রশংসনীয়। এ ক্ষেত্রে আমি বিশ্বাস করি আপনাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। যার যার অবস্থান থেকে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন।