তানোরে কর্মসূচী কাজের উদ্বোধন ও পরিদর্শনে অসন্তোষ ইউএনও

তানোর প্রতিনিধি:

রাজশাহীর তানোরে চলতি অর্থ বছরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির( ইজিপিপি) প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ের কাজের শুভ উদ্ধোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন। শনিবার সকালের দিকে উপজেলার তালন্দ ইউনিয়ন ( ইউপির) লালপুর সাবেরের বাড়ি থেকে চাত্রাপুকুর পর্যন্ত মাটির রাস্তা সংস্কার কাজের শুভ উদ্ধোধন করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন পিআইও এটিএম কাউসার আলী, ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু প্রকল্প সভাপতি সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার খালেদা বেগম। এই কাজের জন্য ৪৩ জন শ্রমিকের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন ১৪ জন। সেখান থেকে ইউএনও যান পাঁচন্দর ইউপির কোয়েল গোয়াল পুকুর জব্বারের মটরের ঘর হতে নোনা ডাঙ্গা হয়ে মাসনা কুড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তা সংস্কার। একাজে ২৬ জন শ্রমিক থাকার কথা থাকলেও মাত্র ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। কাজের সভাপতি মেম্বার মফিজ উদ্দিন, তিনি জানান উদ্ধোধনের দিন এজন্য সব শ্রমিক আসেনি।

এপ্রকল্পের কাজ দেখে ইউএনও বাঁধাইড় ইউপির একান্নপুর সাদিকুলের বাড়ি হতে হরিশপুর ফিরোজের বাড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তা সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। একাজে ২১ জন শ্রমিকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ১১ জন। কাজের সভাপতি মেম্বার সচিন্দ্রনাথ মাহাতো। তিনি কাজের স্থানে ছিলেন না। মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের দেয়া শ্রমিকরা কাজে আসেন নি, আমি যে কয়টির নাম দিয়েছি সবাই এসেছে। বাঁধইড় মিশনপাড়া পাকা রাস্তা হতে বাঁধাইড় প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার। একাজে ২৭ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১৬ জন উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্প সভাপতি ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার আক্তারা বেগম। তিনি জানান এলাকার শ্রমিকরা ভিআইপি ও চেয়ারম্যানের এবং মেম্বারের দেয়া শ্রমিকরা অনুপস্থিত আছেন।

পিআইও বলেন, প্রতিটি প্রকল্পে যে পরিমান শ্রমিক আছে সবাইকে উপস্থিত থেকে কাজ করতে হবে।যারা অনুপস্থিত থাকবেন তাদেরকে টাকা দেয়া হবেনা। প্রতিটি কাজ পরিদর্শনে অসন্তোষ প্রকাশ করে নির্বাহী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, একজন শ্রমিক অনুপস্থিত থাকলে প্রকল্প সভাপতি কে জবাব দিতে হবে। কোনভাবেই অনুপস্থিত থেকে টাকা পাওয়া যাবেনা। আর রাস্তার মাটি দিয়ে রাস্তা সংস্কারও করা যাবেনা। জমি থেকে মাটি নিয়ে রাস্তা সংস্কার করতে হবে। কেউ যদি মনে করে কাজে না এসে টাকা পাবে এটা হবে না। অতীতে কি হয়েছে সেটা দেখার বিষয় না। বর্তমানে শতভাগ কাজ বুঝিয়ে নেয়া হবে। তিনি প্রকল্প সভাপতির কঠোর নির্দেশ দিয়ে আরো বলেন, আমি কখন কিভাবে কাজ দেখতে আসব কেউ জানতে পারবে না। কাজে এসে যদি শ্রমিক কম পাওয়া যায় তাহলে সে ভাতা পাবে না।

শতভাগ কাজ বুঝে নেয়া হবে। এছাড়াও, বাধাইড় ইউপির দিবস্থলী সাত্তারের বাড়ি হতে দিবস্থলী রাজ্জাকের জমি পর্যন্ত সংস্কার। একাজে শ্রমিক ২৫ জন, প্রকল্প সভাপতি মেম্বার অজেদুল। কলমা ইউপির মালবান্ধা এরশাদের বাড়ি হতে দায়মা পুকুর পর্যন্ত ড্রেন খনন। শ্রমিক সংখ্যা ২৫ জন। প্রকল্প সভাপতি মেম্বার শহিদুল। একই ইউপির অমৃতপুর সাধুর মোড় হতে মজিবরের দোকান পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার। শ্রমিক সংখ্যা ২৫ জন, প্রকল্প সভাপতি মেম্বার কালাম। ওই ইউপির পিপড়া রেনুলের বাড়ি হতে শেষ মাথা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার। শ্রমিক সংখ্যা ২৫ জন, প্রকল্প সভাপতি মহিলা মেম্বার সাজেনুর বেগম। মাড়িয়া সুমনের বাড়ি হতে সইবুরের দোকান পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার। শ্রমিক সংখ্যা ২৩ জন, প্রকল্প সভাপতি আসগর আলী। পাচন্দর ইউপির সিদপুর হতে কুন্দাইন চারকুড়া পুকুর হয়ে গুড়ইল ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, শ্রমিক সংখ্যা ৩৩ জন, প্রকল্প সভাপতি মেম্বার গাফফার। ওই ইউপির চককাজিজিয়া হাজেরের বাড়ি হতে মোহনপুর কচুয়া পুকুরের শেষ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, শ্রমিক সংখ্যা ২৮ জন, প্রকল্প সভাপতি মেম্বার মাইনুল ইসলাম।

সরনজাই ইউপির শুকদেবপুর পাকা রাস্তা মোড় হতে মান্নানের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, শ্রমিক সংখ্যা ৩২ জন, প্রকল্প সভাপতি মেম্বার আলিম। কামারগাঁ ইউপির ভবানিপুর গোরস্থানে মাটি ভরাট, শ্রমিক সংখ্যা ২৬ জন, প্রকল্প সভাপতি মেম্বার আনিরুল। ওই ইউপির শ্রীখন্ডা পালপাড়া আইয়ুব মাস্টারের বাড়ি হতে ষষ্ঠী পালের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, শ্রমিক সংখ্যা ২৬ জন, প্রকল্প সভাপতি সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার বেলী বেগম।

একই ইউপির ধানোরা খাজেম আলীর চাতাল হতে জহিরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, শ্রমিক সংখ্যা ২৬ জন, প্রকল্প সভাপতি মেম্বার লুৎফর রহমান। চান্দুড়িয়া ইউপির জুড়ানপুর পাকা রাস্তা হতে আফাজের বাড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তা সংস্কার, শ্রমিক সংখ্যা ৩৫ জন, প্রকল্প সভাপতি নিজাম উদ্দিন।