তানোরে কোম্পানীর ওষুধে পুড়লো শত শত বিঘার আলুর গাছ, কৃষকদের বিক্ষোভ

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে বায়ার কোম্পানির ঔষুধ জমিতে স্প্রে করার পর পুড়ে গেছে কৃষকদের শত শত বিঘা জমির আলুর গাছ।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত বায়ার কোম্পানির তানোর পরিবেশকের দোকানের সামনের কৃষকরা ক্ষতি পূরণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার সুশান্ত কুমার মাহাতো পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

ওই রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তানোর থানা ওসি, বায়ার কোম্পানির তানোর পরিবেশক ও মাঠ কর্মকর্তারা এবং তানোর কৃষি কর্মকর্তাসহ ক্ষতিগ্রস্থ্য কৃষকদের মধ্যে থেকে কয়েকজনের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউএনও।

বৈঠকে বায়ার কোম্পানির মাঠ কর্মকর্তাসহ উদ্ধর্তণ কর্মকর্তা আগামী মঙ্গলবার তানোরে এসে সরজমিন জমির মাঠ দেখে কৃষকরা যেন ক্ষতির মুখে না পড়েন সেদিকে দেখবেন বলে ইউএনও জানান।


এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ্য অন্য প্রান্তিক কৃষকরা দিশাহারা এবং আতংকের মধ্যে রয়েছেন।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে বায়ার কোম্পানির পরিবেশকের দোকানের সামনে থাকা উপজেলার শুকদেবপুর গ্রামের নাদের আলীর ছেলে প্রান্তিক আলু চাষী শামিম হোসেনের বলেন, এবছর তিনি সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। সব ধরনের মোড়ক থেকে আলুকে রক্ষার জন্য শুক্রবার তিনি বায়ার কোম্পানির ঔষুধ জমিতে স্প্রে করার পর দিন শনিবার সকালে জমিতে গিয়ে দেখেন স্প্রে করা জমির সবগুলো আলুর গাছ পুড়ে গেছে।

একই কথা বলেন ইয়াদ আলী ছেলে আসমত আলী। তিনি এবছর ২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন তারও একই অবস্থা।
এসময় আরো অনেক কৃষকরা বলেন, তানোর গোল্লাপাড়া বাজারের সৈয়ব আলী ট্রেডার্স এর মালিক সৈয়ব আলী বায়া’র কোম্পানির পরিবেশক (ডিলাম) । তার মাধ্যমেই বায়া’র কোম্পানির এন্টাকল নামক প্রতিষেধক ঔষুধ জমিতে স্প্রে করার পর ৫০ থেকে ৬০ জন প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র আলু চাষীর শত শত বিঘা জমির আলুর গাছ পুড়ে গেছে। ফলে, তারা ক্ষতিগ্রস্থ্য হওয়ার পাশাপাশি ভেঙ্গে গেছে ক্ষুদ্র এইসব আলু চাষীর স্বপ্ন। সেই সঙ্গে ক্ষুদ্র প্রান্তিক এইসব আলুচাষীর অনেককেই সব হারানোর মত নিঃস্ব হয়ে পথে বসতে হওয়ার চিন্তায় দিশে হারা হয়ে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থ্য আলু চাষীরা তাদের ক্ষতি পুরন পাওয়ার আশায় প্রশাসেনর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্থ্যক্ষেপ কামনা করেছেন।


বায়া’র কোম্পানির পরিবেশক সৈয়ব আলী ট্রেডার্স এর মালিক সৈয়ব আলী বলেন, এরকম ঘটনা আগে কোন দিন ঘটেনি। আমি কোন চাইনা কৃষকদের ক্ষতি হোক। কোম্পানীর লোকজন সরজমিনে গিয়ে সুষ্ঠ তদন্ত করুক। তানোরের কোন চাষীর যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে দাবি জানাচ্ছি।

এবিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর পরিবেশ শান্ত রাখতে ওসিকে জানিয়েছি। বায়ার কোম্পানির মাঠ কর্মকর্তা, পরিবেশক, থানার ওসি, কৃষি কর্মকর্তাকে নিয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত আলাপ আলোচনা করেছি। তানোরে কৃষকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেবিষয়ে আমি বায়ার কোম্পানির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের বলেছি। আমাগী মঙ্গলবার তারা তানোরে আসবেন। তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম বলেন, আলু চার্ষীরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিকে আমরা অবশ্যই দেখবো।

তানোর থানার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাকুবল হাসানের বলেন, বায়ার কোম্পানির পরিবেশকের দোকানের সামনে কৃষকদের বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছিল। এখন পরিস্থতি শান্ত।

স/জে